পাঁচটি স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধান - Solve five health problems
01:02:25 12/14/2023
পাঁচটি স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানের উপায় : আপনার পাঁচ বছরের মেয়েটা খেলতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গেল শক্ত মেঝেতে। নাকটায় আঘাত পেল প্রচণ্ড। সরু রক্তের ধারা বেরিয়ে আসছে নাকের দুটো ছিদ্র দিয়ে। ঘটনার আকস্মিকতায় আপনি হতভম্ব। কী করবেন বুঝতে পারছেন না। হাসপাতালটাও অনেক দূরে। ডাক্তার ডাকবেন সে উপায় নেই। অথচ আপনার যদি প্রাথমিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কিছুটা জ্ঞান থাকতো মাত্র পাঁচ মিনিটেই আপনার বাচ্চার নাক দিয়ে রক্ত পড়াটা বন্ধ করতে পারতেন। শুধু নাক দিয়ে রক্তপাত নয়, প্রতিদিনই আমরা কিছু না কিছু স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হই।
অথচ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে দেরি হয়ে যায়। তাছাড়া যখন তখন হাতের কাছে ডাক্তারও পাওয়া যায় না। এখানে এ ধরনের কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা ও তার প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করা হলো, যাতে ডাক্তারের অভাবেও আপনি উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারেন।
১. মাংসপেশিতে টান ধরা
সাধারণত প্রচুর পরিশ্রমে কিংবা খেলাধুলা করার সময় হঠাৎ করে পায়ের পেশিতে টান ধরে। খুবই যন্ত্রণাদায়ক অবস্থা সেটা। অনেকে হয়তো ঘুমিয়ে আছেন, ঘুমের ভেতর পেশিতে টান পড়ে ফলে ভেঙে যায় ঘুম। দুঃসহ যন্ত্রণায় নীল হয়ে আসে শরীর। শরীরে লবণের ঘাটতি হলে পেশিতে টানের পরিমাণ বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে যা করণীয়-
- প্রথমে টান ধরা পেশিতে জোরেশারে মালিশ করুন, যতক্ষণ না পেশিটা সোজা হয়। ততক্ষণ উপর-নিচ দলাই মলাই করতে থাকুন।
- ব্যথার স্থলে এক টুকরো বরফ ঠেসে ধরুন।
- বরফ ঠাসার পরে ব্যথা দূর না হলে ব্যথানাশক ওষুধ যেমন ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম কিংবা প্যারাসিটামল খান। তবে ব্যথানাশক ওষুধ খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়। এক গ্লাস দুধ কিংবা কিছু খাবার পরে ওষুধটি খাবেন।
- পেশিতে ঘন ঘন টান পড়লে খাবার স্যালাইন কিংবা ঘরে স্যালাইন তৈরি করে খাবেন। রাতের বেলা ডায়াজিপাম জাতীয় কোনো ওষুধ কয়েক দিন খেতে পারেন।
২. নাক দিয়ে রক্ত পড়া
- শুধু আঘাতজনিত কারণ নয়, শারীরিক অসুখজনিত কারণেও নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। তবে যে কারণেই নাক দিয়ে রক্ত পড় ক না কেন প্রাথমিক চিকিৎসা নিম্নরূপ-
- শোয়া অবস্থায় থাকলে উঠে বসুন। তারপর দু' আঙুল দিয়ে নাকটা শক্ত করে চেপে ধরুন। পাঁচ থেকে দশ মিনিটের মধ্যে নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
- যদি পাঁচ মিনিটের মধ্যে রক্তপাত বন্ধ না হয় তাহলে পুনরায় নাকটি চেপে রাখতে হবে এবং নাকের উপর এক টুকরো বরফ চেপে ধরতে হবে।
- দশ থেকে পনেরো মিনিটের মধ্যে রক্তপাত বন্ধ না হলে নাকের দুটো ছিদ্রে পরিষ্কার শুকনো তুলোর পুটলি ঢুকিয়ে দিন এবং পুনরায় নাকটা চেপে ধরুন। রক্তপাত বন্ধ হলে তুলোর পুটলি আরো কিছুক্ষণ রেখে দিন তারপর খুব সতর্কতার সাথে ধীরে ধীরে বের করবেন। যদি তুলো জমাট রক্তের সাথে আটকে যায় তাহলে লিকুইড প্যারাফিন বা ভেসলিন মাখিয়ে তুলোটা বের করুন।
- যতক্ষণ নাক দুটো বন্ধ থাকবে মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নেবেন। এ সময়ে ঢোক গিলবেন না ।
- এফিলিয়েট মার্কেটিং করে উপার্জন
৩. ত্বকে চুলকানি ও লাল ফুসকুড়ি
নানা কারণে ত্বকে চুলকানি ও লাল ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন অ্যালার্জি থেকে এটা হতে পারে যেমন পোশাক-আশাক, খাবার, কার্পেট প্রভৃতি। পোকামাকড়ের কামড় থেকেও প্রচুর চুলকানি হয় ও স্থানটিতে লাল ফুসকুড়ি দেখা দেয়।ত্বকে চুলকানি ও লাল ফুসকুড়ির জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন-
- চুলকানির স্থানে বরফ চেপে রাখবেন। চুলকানি যদি পোশাক-আশাকের কারণে হয় ঐ পোশাকটি পরবেন না । খাবারজনিত কারণে হলে দায়ী খাবারটি বর্জন করবেন। এরপর এন্টিহিস্টামিন ওষুধ খেতে হবে। দু'থেকে তিন দিন খেলেই সেরে যাবে চুলকানি ও লাল ফুসকুড়ি ।
- পোকামাকড়ের কামড়ে চুলকানি হলে স্থানটি পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। তারপর বেকিং পাউডার পানিতে মিশ্রিত করে ঘন পেস্টের মতো বানিয়ে আক্রান্ত স্থানে লেপটে দেবেন। সেই সাথে এন্টিহিস্টামিন ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।
৪. মরিচের ঝাল
অনেকে খাবার সময় কাঁচা মরিচ চিবিয়ে থাকেন। তার জিহ্বা ও ঠোঁটে যেন আগুণ ধরে যায়। এ অবস্থায় যা করণীয়-
এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানি করুন। মুখের মধ্যে কিছু চিনি রেখে দিন।
ঝাল বেশি হলে এক গ্লাস ঠাণ্ডা দুধ খান। দুধের কেজিন নামক প্রোটিন যৌগ মুখের তাপ জ্বালা উৎপাদনকারী রিসেপ্টরের সাথে যুক্ত হয়ে সেখান থেকে ঝাল সৃষ্টিকারী মরিচের তৈলাক্ত যৌগকে হটিয়ে দেয়। ফলে ঝাল লাগা বন্ধ হয়ে যায়।
৫. চোখে বালুকণা জাতীয় কিছু পড়লে চোখে বালুকণা বা চুল বা অন্য কোনো বস্তু পড়লে নিচের পরমার্শগুলো মেনে চলবেন-
- চোখ হাত দিয়ে কচলাবেন না। পরিষ্কার পানি দিয়ে প্রথমেই চোখ ধুয়ে ফেলুন।
- আঙুল দিয়ে হালকা করে চোখের পাতা উপরের দিকে টেনে ধরুন। তারপর চোখ ডানে বায়ে ঘুরিয়ে কোথায় বালুকণা বা চুল আটকে আছে স্থানটি শনাক্ত করুন। তারপর একটি পরিষ্কার কাঠিতে তুলো পেঁচিয়ে অথবা পরিষ্কার রুমালের কোণা দিয়ে বস্তুকণাটিকে সতর্কতার সাথে বের করে আনুন ।
বস্তুকণা যদি চোখের পাতার নিচে আটকে থাকে যা বের করা আপনার জন্য সম্ভব হচ্ছে না কিংবা বস্তুকণা চোখে ঢোকার পর অসম্ভব চোখ ব্যথা করছে, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছে কিংবা বেশি জ্বালা পোড়া করছে- দেরি না করে সাথ সাথেই ডাক্তারের কাছে চলে যাবেন। তবে তার আগে দুটো চোখই ঢেকে নেবেন নরম পরিষ্কার কাপড় দিয়ে। এতে করে চোখের সঞ্চালন কম হবে এবং চোখের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হবে।