Narrow selection

​​​​​​​হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ সমূহ - Symptoms of Hepatitis B


05:48:02 12/10/2023

হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ সমূহ : হেপাটাইটি-বি পৃথিবীর অন্যতম সংক্রামক এবং ঘাতক ব্যাধি। এ রোগটি হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের দ্বারা ঘটে। এই ভাইরাসটি এমন বিপজ্জনক যে প্রধানত তা লিভারকে আক্রমণ করে। হেপাটাইটিস-বি এমন এক রোগ যা লিভারে প্রদাহ ঘটায় এবং লিভার ক্যান্সার সৃষ্টি করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সারা বিশ্বে দু'শ কোটির বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত এবং ৪০ কোটির বেশি মানুষ এই রোগ বহন করছে।

চিন্তার বিষয় হলো যারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত তাদের সুস্থ নাও দেখাতে পারে- এমনকি অনেকে জানতেও পারে না যে তারা হেপাইটিস-বি'তে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত মায়ের গর্ভজাত শিশুর এ রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকিও রয়েছে। দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে এসব শিশু দীর্ঘস্থায়ী লিভারের রোগে মারা যেতে পারে। স্কুলের ছেলে মেয়েদের হেপাইটিস-বি সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। স্কুলে খেলাধুলা করার সময়ে দুর্ঘটনাবশত কেটে যাওয়া, ছিঁড়ে যাওয়া কিংবা রক্তপাতের ঘটনা কম নয়। এ সময়ে হেপাইটিস-বি ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি থাকে।

খুব সামান্য রক্ত যেমন ০.০০০০৪ মিলি যা খালি চোখে দেখা সম্ভব নয়- তা এই রোগ ঘটানোর জন্যে যথেষ্ট। হেপাইটিস-বি এইডস-এর চেয়ে বেশি সংক্রামক। এইডস-এর কারণে এক বছরে যত লোকের মৃত্যু ঘটে, হেপাইটিস-বির কারণে দৈনিক তার চেয়ে বেশি লোকের মৃত্যু হয়। হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস কাপড়ে লেগে থাকা শুকনো রক্তে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় বেঁচে থাকে। হেপাটাইটিস-বির এই শক্তিমত্তা এটাই প্রমাণ করে যে, যেখানেই থাকুক না কেন, যে কোনো সময় সেটা মানব দেহে আঘাত হানতে পারে।

রোগের উপসর্গ

অনেক সময় রোগের কোনো উপসর্গ নাও দেখা দিতে পারে। তবে প্রাথমিক স্তরে ঠাণ্ডায় কাঁপুনি, ক্ষুধামান্দ্য, ক্লান্তি অনুভব, অল্প মাত্রায় জ্বর, শরীর ব্যথা প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। পরবর্তী স্তরে যে উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে তা হলো- অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, জণ্ডিস, ত্বক ও চোখে হলুদ বর্ণ, ফ্যাকাশে বর্ণের পায়খানা, গাঢ় বর্ণের প্রস্রাব প্রভৃতি ।

শিশু-কিশোরদের এ রোগ কীভাবে ছড়ায়

  • সংক্রমিত সূঁচের আঘাতে সৃষ্ট ক্ষত, ত্বক কেটে যাওয়া কিংবা ছিঁড়ে যাওয়া অথবা সংক্রমিত সূচের মাধ্যমে রক্তদান বা রক্ত গ্রহণ করলে।
  • রক্তরসের মাধ্যমে যেমন লালা, ঘাম, ক্ষত থেকে নিঃসৃত রস (এটা সবচেয়ে বেশি ঘটে খেলার মাঠে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে)।
  • সংক্রমিত সূঁচ দিয়ে শরীরে টাটু আঁকলে ।
  • সংক্রমিত মায়ের কাছ থেকে জন্মের কিংবা প্রাথমিক ভ্রণাবস্থায়।
  • সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে দুর্ঘটনাজনিত সংস্পর্শের মাধ্যমে যেমন কেটে গেলে বা ছিড়ে গেলে তাকে যদি সংক্রমিত ব্যক্তি বহন করে।
  • ডেন্টিস্ট-এর চেম্বারে দাঁতের চিকিৎসায় একই যন্ত্রপাতি বিভিন্ন জনের উপর ব্যবহার করলে।

হেপাটইটিস-বি এর চিকিৎসা

সত্যিকার অর্থে হেপাইটিস-বি এর তীব্র সংক্রমণে চিকিৎসা ক্ষেত্রে মূলত কোনো কার্যকর ওষুধ নেই। কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ইন্টারফেরন ওষুধটি ব্যবহার করা হয় কিন্তু ওষুধটি দামি এবং সাফল্যের হার মাত্র ১০-২০%। সুতরাং প্রতিরোধই এ রোগের হাত থেকে রেহাই পাবার একমাত্র ব্যবস্থা এবং একমাত্র টিকার মাধ্যমেই সেই প্রতিরোধ সম্ভব। যদি জন্মের সময় শিশুকে এই টিকা দেয়া না হয় তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকা দিতে হবে। এই টিকা যে কোনো বয়সে যে কোনো তারিখে যে কোনো সময় দেওয়া যায়। একমাত্র এই টিকাই পারে বাচ্চাকে হেপাটাইটিস-বি-এর আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে।

হেপাটাইটিস বি টিকার সময়সূচি

মাংশপেশিতে বিভিন্ন সময়ে ৩টি মাত্রায় এ টিকা প্রদান করা হয়।

  • ১ম মাত্রা যে কোনো দিন ।
  • ২য় মাত্রা ১ম মাত্রার এক মাস পর ।
  • ৩য় মাত্রা ১ম মাত্রার ৬ মাস পর।

টিকার কার্যকারিতা দীর্ঘায়িত করার জন্য ১ম মাত্রার ৫ বছর পর আরেকটি মাত্রা দেয়া হয়। যেটাকে বুস্টার মাত্রা বলে। যে কোনো বয়সে যে কেউ হেপাটাইটিস-বি রোগে আক্রান্ত হতে পারে যদি সে টিকা না নিয়ে থাকে। টিকা দিয়েই এই রোগ প্রতিহত করার একমাত্র উপায়। আপনি নিজে টিকা নিন এবং পরিবারের সদস্যদের টিকা দিয়ে বিপদ মুক্ত করুন ।

 

হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জিহাদী জীবন

 


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color