সুস্থ সুন্দর ত্বকের জন্য ভিটামিন - Vitamins for healthy beautiful skin
16:00:24 12/10/2023
সুস্থ সুন্দর ত্বকের জন্য ভিটামিন : ভিটামিন বা ভাইটাল অ্যামিনস আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। তবে ভিটামিন বেশির ভাগই আমাদের শরীরে তৈরি হয় না। তাই ভিটামিন বাইরে থেকে গ্রহণ করতে হয়। আর এসব ভিটামিন শরীর ও স্বাস্থ্যের উন্নতি করে তার সুপ্রভাব ফেলে আমাদের ত্বকে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন সরাসরি ত্বকের মাধ্যমেও প্রবেশ করে ও ত্বকের অসাধারণ উন্নতি ঘটায়।
সাধারণত প্যাসিভ ডিফিউশন প্রক্রিয়াতে ভিটামিন সরাসরি আমাদের ত্বকে প্রবেশ করতে পারে। অর্থাৎ ত্বকের ওপর লাগিয়ে বা ঘষে কিংবা ইলেকট্রিকাল স্টিমিউলেশনের মাধ্যমে ত্বকে ভিটামিনের প্রবেশ ঘটানো যেতে পারে। আমাদের ত্বক ভিটামিন এ, সি, ই, বি, ও প্যানটোথেনিক এসিড অ্যাবসরব করতে পারে। এবার জেনে নেয়া যাক, কোন উপাদানে কোন ভিটামিন রয়েছে এবং তার কাজ ও কী সমস্যায় প্রয়োজন।
ভিটামিন এ
ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর রাখতে ভিটামিন এ খুবই প্রয়োজনীয়। ভিটামিন এ ত্বক কোষের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। এছাড়া মিউকাস মেমব্রেনের সুস্থতায় ভিটামিন এ প্রয়োজন। মুখের ভেতরে এবং ঠোঁটের আর্দ্রভাব বজায় রাখে ভিটামিন এ ত্বকের মাধ্যমে বা প্যাসিভ ডিফিউশনের মাধ্যমে যে ভিটামিন এ পাওয়া যায় তা ত্বক কোষের জন্য খুবই ভালো। তবে শরীরের জন্য যে পরিমাণ ভিটামিন এ দরকার তা ত্বকের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব নয়। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমাণিত যে পাকা পেঁপে ও গাজরে যে পরিমাণ ভিটামিন এ আছে তা ত্বক খুব সহজেই গ্রহণ করতে পারে। সুতরাং পাকা পেঁপে ও গাজরের তৈরি মাস্ক ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল হবে।
ভিটামিন সি
ভিটামিন সি কোলাজেন তৈরি করতে সাহায্য করে। কোলাজেন ত্বকের টানটান ভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরের প্রোটিনের ২৫ শতাংশ কোলাজেন। তাছাড়া রক্তনালী তৈরি হয় কোলাজেন দিয়ে। ভিটামিন সি-র অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ভূমিকা রয়েছে। সকল টক ফলে রয়েছে ভিটামিন সি। আমলকি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল, বহুযুগ ধরে ত্বক ও চুলের পরিচর্যার আমলকি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শরীরের জন্য যে পরিমাণ ভিটামিন সি প্রয়োজন তা আপনাকে খাদ্যের সাথে গ্রহণ করতে হবে। তবে ত্বক ও চুলের যত্নে প্যাসিভ ডিফিউশনের কথা মনে রেখে সরাসরি ত্বকে বা মাথায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলের ব্যবহার করতে পারেন। যেমন আমলকির নির্যাস সপ্তাহে একদিন মাথায় লাগাতে পারেন। ভিটামিন সি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে, তাই কমলার রস বা খোসার মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে।
ভিটামিন ই
ভিটামিন ই কে বলা হয় ইউথ ভিটামিন। ত্বক ও চুলের ওপর ভিটামিন ই-এর প্রভাব খুব বেশি। বিউটিশিয়ানরা ভিটামিন ই খুবই পছন্দ করেন। ফেশিয়াল এবং নানা রকম হেয়ার ট্রিটমেন্টে ভিটামিন ই ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া ত্বকের প্রিম্যাচিউর এজিং বা অকাল বার্ধক্য বা ভাজ পড়ে যাওয়া সারাতে ভিটামিন ই অনন্য। ভিটামিন ই-এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফ্রি র্যাডিকেলস আমাদের টিস্যুর স্বাস্থ্য নষ্ট করে। এই ফ্রি র্যাডিকেলসগুলো ধ্বংস করতে সহায়তা করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই ভিটামিন ই ত্বকের ও চুলের ঔজ্জ্বল্য রক্ষা করে এবং বয়সের ছাপ পড়া পিছিয়ে দেয়। ভিটামিন ই-এর প্রাকৃতিক উৎস হচ্ছে সূর্যমুখী তেল, বাদাম ইত্যাদি। প্রায় সব ভেজিটেবল তেলে ভিটামিন ই আছে, আজকাল বাজারে ভিটামিন ই ক্রিম পাওয়া যায়। ভালো ব্রান্ডের ই সমৃদ্ধ ক্রিম যাচাই করে দেখতে পারেন। এছাড়া ভিটামিন ই ক্যাপসুলের তেলও মাখতে পারেন।
ভিটামিন ডি
ভিটামিন ডি ত্বকের মাধ্যমে শোষিত হয় না তবে তৈরি হয় ত্বকে। ত্বকের শত্রুও ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডি-এর অভাবে রিকেট ও অস্টিওম্যালেশিয়া হয়। ভিটামিন ডি তৈরির জন্য সূর্যালোক প্রয়োজন। আবার রোদ থেকে বাঁচার প্রয়োজন আছে। কারণ UVA ও UVB রশ্মির ত্বকের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। এই রশ্মির প্রভাবে ত্বক কালো হয়ে যাওয়া থেকে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। এজন্য রোদ এড়ানো ও বের হবার পূর্বে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা প্রয়োজন।
পানটোমেনিক এসিড ও নায়াসিন
এ দুটি ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের মধ্যে পড়ে। ময়শ্চারাইজারে এ দুটি উপাদান থাকে। এ দুই ভিটামিন ত্বক আর্দ্র রাখে। ডাল ও ডিমে এই ভিটামিন রয়েছে। শতযুগ আগে থেকেই ডাল বাটা উপটান হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। ত্বক ও চুলের যত্নে এই সকল উপাদান তাই অনন্য ।
●হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জিহাদী জীবন