Narrow selection

​​​​​​​মানসিক চাপ কমানোর উপায় - Ways to reduce stress


01:08:33 12/14/2023

মানসিক চাপ কমানোর উপায় : মানসিক চাপ যখন বেশি, সাধারণত কর্মব্যস্ত উদ্বেগপূর্ণ জীবনযাপনই মানসিক চাপের জন্য দায়ী। তাছাড়া চাকরি হারানো, নিকটজনের বা প্রিয়জনের মৃত্যু, বিরহ বিচ্ছেদ ইত্যাদিও মানসিক চাপের জন্য দায়ী। মানসিক চাপ বা এই ট্রেস মানুষের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং ইমিউন সিস্টেম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই স্ট্রেস থেকে যে কোনো রোগ হতে পারে। সেটা সামান্য ঠাণ্ডা লাগা থেকে ক্লান্তি, এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে।

কর্মব্যস্ত মানুষেরা অনেকেই অত্যন্ত মানসিক চাপের মধ্যে দিন যাপন করেন এবং সেই সাথে ঠিকমতো খাবার গ্রহণ করেন না। এতে করে তাদের কর্মদক্ষতা কমে যায় এবং ক্লান্তিকর দিন পার করেন। খাদ্য তালিকায় কিছু পরিবর্তন এবং সংযোজনের মাধ্যমে আমরা কর্মশক্তি বাড়াতে পারি এবং ক্লান্তি কমাতে পারি যা স্ট্রেস বা মানসিক চাপের কারণে হয়। দেখা যাক আমরা কী করতে পারি।

প্রথমত আমাদের চেষ্টা করা উচিত শত কাজের মাঝেও ঠিক সময়মতো খাবার গ্রহণ করা। আর খাদ্য তালিকায় থাকবে এমন সব খাবার যা এনার্জি লেভেল বাড়ায়। যেমন প্রচুর তাজা সবজি, ফল এবং আমিষ জাতীয় খাদ্য। লক্ষ্য রাখতে হবে কিছু আমিষ যাতে উদ্ভিদ হতে আসে যেমন বাদাম, ডাল এবং বীজ। কিছু খাবার গ্রহণ করার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন রিফাইন্ড ময়দা, হাইড্রোজেনেটেড ফ্যাট, ভাজা খাবার, চিপস বেকড খাবার, অ্যালকোহল, ক্যাফেইন ইত্যাদি এড়িয়ে চলাই ভালো। দিনে অন্তত তিনবার খাবার গ্রহণ করা উচিত। আর অল্প পরিমাণে বার বার খাবার গ্রহণ করা খুবই ভালো।

এরপর আসা যাক ব্যায়াম এবং বিশ্রাম প্রসঙ্গে। শারীরিক মাত্রা বেড়ে যায় এবং এতে মানসিক চাপ কমে। কিন্তু যারা মানসিক চাপ বা স্ট্রেসের মধ্যে দিন পার করছেন তারা বলেন যে, তাদের কর্মব্যস্ত জীবনে ব্যায়ামের জন্য সময় দেয়া সম্ভব নয়, কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যারা ব্যায়াম করছেন কিংবা হাঁটছেন তারা সবাই একথা স্বীকার করেছেন যে, এতে তারা আগের থেকে ভালো বোধ করছেন। আর হ্যাঁ, সময়মতো বিশ্রাম নেয়াও অত্যন্ত জরুরি। অতিরিক্ত ওজন আরেকটি সমস্যা। অতিরিক্ত ওজন কর্মদক্ষতা ও কর্মশক্তি কমিয়ে দেয়।

এছাড়া অতিরিক্ত ওজন থেকে ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া বাড়তি পুষ্টির জন্য ভিটামিন ও মিনারেল গ্রহণ করা যেতে পারে। কিন্তু তা অবশ্যই ডায়েটেশিয়ান কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হতে হবে। ভিটামিন ও মিনারেলের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, এন্টিঅক্সিডেন্ট (ভিটামিন সি, ই ও এ) এবং ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। তাছাড়া এসেনসিয়াল ফ্যাটি এসিড যা মাছের তেলে পাওয়া যায়—রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কোনো এনজাইম কিউটেন, এল-কারনিটিন এ এনার্জি লেভেল বাড়াতে চেষ্টা করে। আঙ্গুর বিচির নির্যাস একটা ভালো এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং এটা ব্লাড ব্রেইন ব্যারিয়ার ভেদ করে ঢুকে কোষের (মস্তিষ্ক) ক্ষয় প্রতিরোধ করে ও কোষ সতেজ রাখে।

বাড়তি শক্তি যোগাতে নানা রকম ভেষজ যেমন জিনসেং, আলফা আলফা ঘাস ও স্পিরুলিনা ব্যবহার করা যেতে পারে কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগে জিনসেং ব্যবহার করা উচিৎ নয়। এছাড়া রয়াল জেলি যাতে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, প্যানটোথেনিক এসিড, এসিটাইল কোলিন, এমাইনো এসিড, খনিজ এবং আরো অনেক প্রয়োজনীয় উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং এনার্জি লেভেল বাড়ায়। মানসিক চাপ বা স্ট্রেস কমানোর জন্য তাই দরকার সঠিক খাদ্যতালিকা, ব্যায়াম, বিশ্রাম ও নিয়ন্ত্রিত ওজন।

মোটকথা: নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। আর টেনশন বা চিন্তা একেবারে পরিহার না করতে পারলেও কমানো উচিত। আমাদের সকলেরই বোঝা দরকার যে চিন্তা মানে দুশ্চিন্তা কোনো কাজের সমাধান করে না বরং আমাদের নানাবিধ শারীরিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর যা ঘটার তাতো ঘটবেই, শুধু দুর্ভাবনা করে কী লাভ। তাই এই কর্মব্যস্ত দিনগুলো উদ্বেগপূর্ণভাবে না কাটিয়ে একটু শান্ত হওয়া প্রয়োজন, এ থেকে হয়তো মুক্তি পাওয়া যাবে সকল মানসিক চাপ ও ক্লান্তি থেকে।

 

হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জিহাদী জীবন

 


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color