Narrow selection

​​​​​​​হিলফুল ফুজুল কাকে বলে? - What is Hillful Fuzul?


00:31:36 12/14/2023

হিলফুল ফুযূল কাকে বলে? : রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিলফুল ফুযূলে উপস্থিত হয়েছিলেন। এটা ছিল আরবের মৈত্রীচুক্তির মধ্যে সর্বাপেক্ষা কল্যাণকর আর সর্বোত্তম মৈত্রীচুক্তি। এর পটভূমি ছিল: জুবাইদ গোত্রের এক ব্যক্তি কিছু পণ্য নিয়ে মক্কায় আসে। অতঃপর তার থেকে সেই পণ্য কিনে নেয় মক্কার সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি আস ইবনে ওয়ায়েল। পণ্য কিনে নেয় ভালো কথা- কিন্তু সে তার দেনা নিয়ে টালবাহানা করতে থাকে। অতঃপর যুবাইদী মক্কার বেশকিছু নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির কাছে গিয়ে তার বিরুদ্ধে নালিশ দায়ের করে। কিন্তু তারা সবাই আস ইবনে ওয়ায়েলের পদমর্যাদার কারণে যুবাইদির জন্য তার সঙ্গে ঝামেলায় জড়াতে অস্বীকৃতি জানায়; উল্টো তাকে খানিকটা ধমকে দেয়। এরপর যুবাইদী কিছু ভালো মনের মানুষকে নিয়ে গোটা মক্কাবাসীদের কাছে সাহায্যের ফরিয়াদ জানায়।

এতে করে কিছু ভালো মানুষের ভেতরে আত্মমর্যাদাবোধ প্রবল আন্দোলন করে ওঠে। তারা সবাই আব্দুল্লাহ বিন জাদআনের ঘরে সমবেত হয়। আব্দুল্লাহ বিন জানআন তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেন। অতঃপর তারা আল্লাহর নামে অঙ্গীকার করে যে, প্রত্যেক যালিমের বিপক্ষে মাযলুমের পক্ষে তারা এক হয়ে কাজ করবে। যতক্ষণ না তার অধিকার সেই যালিম থেকে আদায় করে নিবে। কুরাইশরা এটার নাম দিয়েছিল 'হিলফুল ফুযূল'। অতঃপর তারা সবাই মিলে আস ইবনে ওয়ায়েলের কাছে গেলো এবং তার থেকে যুবাইদীর পাওনা আদায় করে তার হাতে তুলে দিলো ।

রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবসময়ই এই মৈত্রীচুক্তির একজন সদস্য ছিলেন এবং তিনি সবসময় এটাতে শরীক হতে পারার কারণে গর্ববোধ করতেন। এমনকি নবুওতের পরেও তিনি বলেছিলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনে জাদআনের ঘরে একটি চুক্তির মধ্যে শরীক হয়েছিলাম। যদি ইসলাম আসার পরেও এমন একটি চুক্তির দিকে আমাকে আহ্বান করা হতো, তবে আমি সেই আহ্বানে সাড়া দিতাম। তারা অঙ্গীকার করেছিল- প্রত্যেকের কাছে তার সঠিক অধিকার ফিরিয়ে দিবে। এবং মাযলূমকে যালিমের অত্যাচার থেকে হিফাযত করবে ।

এখানে যে বিষয়টি লক্ষণীয় তা হলো: যদি কেউ তৎকালীন গোটা জাযীরাতুল আরবে বিরাজমান ব্যাপক পরিস্থিতি খুব ভালো করে তলিয়ে দেখে, পাশাপাশি গোটা জাযীরার ধর্ম, রাজনীতি আর সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু মক্কার পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রতি গভীর দৃষ্টি বুলায়- তবে তার কাছে যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠবে তা হলো: কেবল এক যুবাইদীর ফরিয়াদই কিন্তু সেই সকল লোককে হিলফুল ফুযূলের প্রতি টেনে এনেছিল না। কিংবা সামান্য কিছু নির্যাতিত মানুষের ক্রন্দন আর বিলাপই কিন্তু তাদেরকে যালিমদের বিরুদ্ধে তরবারি নিয়ে দাঁড়াতে উদ্দীপ্ত করে তুলেছিল না; বরং গোটা আরবের অনৈতিক, অনিরাপত্তা, বিশৃঙ্খলা আর অস্থিরতা তাদেরকে এই পথে ডেকে এনেছিল।

কারণ তারা একে অপরের প্রতি মোটেও আস্থা রাখতে পারত না। কেউই কাউকে বিশ্বাস করতে পারছিল না। এই কারণে সামান্য হলেও নিরাপত্তা আর সামাজিক আস্থার প্রয়োজন ছিল। বিশেষ করে যে সকল লোক বাইরে থেকে মক্কায় আসবে তাদের ইযযত, সম্মান, হক আর অধিকার রক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কিছু করার প্রয়োজন ছিল- এই বোধোদয় তাদেরকে হিলফুল ফুযূল গঠনে উদ্বুদ্ধ করেছিল।

 

● হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জিহাদী জীবন


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color