কেটে গেলে করণীয় - What to do when cut
00:43:51 12/14/2023
কেটে গেলে করণীয় কি? আমরা দৈনন্দিন জীবনে নানা ঘটনা-দুর্ঘানায় পতিত হই। এতে আমাদের শরীরের নানা স্থান কেটে যায়। ঠিক এ রকম হলে আমরা নিজেরাই প্রাথমিক সতর্কতা অবলম্বন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারি। কেটে বা ছড়ে যাবার ফলে সৃষ্ট ক্ষত হলে কি ব্যবস্থা নিতে হবে এখন আমরা সে বিষয়ে জানাবো।
কী মনে রাখবেন?
১. ক্ষতের চারপাশের ত্বক ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে।
২. ক্ষতের ওপরে পরিষ্কার গজ রাখতে হবে, তারপর পুরুপ্যাড দিতে হবে এবং শেষে ব্যান্ডেজ বাঁধতে হবে। ৩. আঘাতপ্রাপ্ত স্থানটিকে বিশ্রামে রাখতে হবে।
৪. রোগী যাতে সংকটাপন্ন অবস্থায় না যায় তার জন্য চিকিৎসাগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
কী করবেন ?
১. ক্ষতের ড্রেসিং-এর জন্যে কিছু জিনিসের প্রয়োজন হয়। এগুলো এগুলো সবসময় ঘরে ফাস্ট এইডবক্সে রাখতে হবে যেমন-তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ। প্রথমে রোগীর ক্ষত ড্রেসিং-এর জন্যে তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ নিন। সেইসঙ্গে সাবান এবং পানিও নেবেন। ২. কেবলমাত্র ক্ষতের চারপাশের ত্বক ধৌত করবেন, ক্ষতের ভেতরে নয়। গরম পানিতে তুলা ভিজিয়ে নিতে হবে, তারপর সেটা দিয়ে ক্ষতের প্রান্ত থেকে বাইরের দিকে পরিষ্কার করবেন। ৩. ক্ষতের ওপর এবার গজ বিছিয়ে দেবেন। পুরো ক্ষত ঢাকবেন গজ দিয়ে। গজের ওপরে পুরু প্যাড বিছাবেন ব্যান্ডেজ বাঁধবেন ।
রিংপ্যাড বানাবেন কীভাবে?
১. বড় একটি রুমাল নিয়ে সেটাকে কোনাকুনি একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ঘুরিয়ে দড়ির মতো তৈরি করুন। ২. তারপর একপ্রান্ত লুপের মতো বানিয়ে অন্যপ্রান্ত তার মধ্য দিয়ে পেঁচিয়ে আনুন। ৩. যখন ব্যান্ডেজ শেষ হয়ে যাবে তখন এই পুরু রিং প্যাড ক্ষতকে রক্ষা করবে।
বস্তুকণাযুক্ত রিংপ্যাডে-এর ব্যবহার
১. যদি ক্ষতের ওপর কোনো বস্তু কণা থাকে, তাহলে একখণ্ড পরিষ্কার গজ দিয়ে তা সরিয়ে ফেলুন। কিন্তু যদি বস্তুকণা গেঁথে থাকে তাহলে তা নাড়াচাড়া করার দরকার নেই । চিকিৎসক এসে সেটাকে তোলার ব্যবস্থা করবেন।
২. একখণ্ড জীবাণুমুক্ত গজ দিয়ে সতর্কতার সঙ্গে ক্ষত ঢাকুন। গজটা যেন এমন বড় হয় যে পুরো ক্ষতটাকে ঢাকার পরেও প্রান্তসমূহ ক্ষতের বাইরের দিকের ত্বকের ওপর এসে পড়ে। যদি গজের টুকরোটি খুব ছোট হয় তাহলে তা পেছনে সরে গিয়ে ক্ষতের অংশবিশেষ বের হয়ে আসতে পারে।
৩. এবার তার ওপরে রিং প্যাড বসান, যাতে ক্ষতের মধ্যকার বস্তুকণাটি ঠিক মাঝখানে থাকে। এবার এর ওপরে প্যাড ও ব্যান্ডেজ বাঁধুন। রিং প্যাড থাকার কারণে পুরু প্যাড ও ব্যান্ডেজের চাপে বস্তুকণাটি গভীরে ঢুকতে পারবে না। এবার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
লক্ষ্য করুন
- রোগীকে বসিয়ে অথবা শুইয়ে নেবেন।
- ক্ষতের প্রাথমিক পরিচর্যার উদ্দেশ্য হলো ইনফেকশনের হাত থেকে রক্ষা করা। ক্ষত পরিষ্কার করার আগে আপনার হাত দুটো ভালো করে ধুয়ে নেবেন। যেসব জিনিস দরকার হবে যেমন সাবান, পানি, তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ প্রভৃতি পরিষ্কার হাত দিয়ে ধরবেন ।
- ক্ষতের চারপাশের ত্বক পরিষ্কার করবেন, ক্ষতের মধ্যে নয়। তুলা পানি এবং সাবান দিয়ে ভিজিয়ে নেবেন। প্রতিবার চাপের সময় ভিন্ন ভিন্ন পরিষ্কার তুলা ব্যবহার করবেন। তুলার বলটি ক্ষতের প্রান্ত থেকে বাইরের দিকের ত্বকে ঘষবেন।
- ক্ষতে যখন গজ স্থাপন করবেন, খেয়াল রাখতে হবে গজটি যেন বড় এবং পরিষ্কার হয়। - গজের ওপরে তুলার পুরু প্যাড বিছাবেন।
- ব্যান্ডেজ এমনভাবে বাঁধতে হবে যেন খুব টাইট না হয় ।
- ক্ষত অংশকে বিশ্রামে রাখতে হবে।
- রোগী যাতে শক-এ না যায় তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
- যে কোনো ক্ষত থেকে সামান্য রক্তপাত হতে থাকলে একটু চাপ দিয়ে ব্যান্ডেজ করতে হবে।
- প্রাথমিক চিকিৎসা প্রাক্কালে এন্টিসেপটিক অথবা এন্টিবায়োটিক লোশন এবং ক্রিম ব্যবহার করবেন না। এসব বস্তু ক্ষত উপশমকে ব্যাহত করতে পারে।
- ক্ষত হলে টিটেনাস বা ধনুষ্টংকারের ঝুঁকি থাকে। ক্ষত যত গভীর হবে, ঝুঁকি তত বেশি হবে। রোগীকে যদি পূর্বে টিটেনাসের টিকা দেয়া হয়ে থাকে তাহলেও আবার নেয়া ভালো।
চোখের ক্ষতের ড্রেসিং
যদি এক চোখে ক্ষত হয় তাহলে সেই চোখটি প্রথমে নরম পরিষ্কার প্যাড দিয়ে তারপর ব্যান্ডেজ অথবা বড় ফিতা দিয়ে বাঁধতে হবে। যেহেতু একচোখ নড়লে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্য চোখটিও নড়ে এবং এর ফলে প্রচুর যন্ত্রণা হয় তাই দুচোখই বাঁধা ভালো। এরপর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। কিন্তু চোখের ক্ষত থেকে বাইরের বস্তু কণা বের করার চেষ্টা করলে চোখের আরো ক্ষতি হতে পারে।
● হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জিহাদী জীবন