মেরাজের ইতিহাস
12:26:00 01/06/2025
মেরাজের ইতিহাস
নবুওয়াতের পঞ্চম বৎসর ইসলামী ইতিহাসে এক বিশেষ মর্যাদা রাখে। এতে ফখরুল আম্বিয়া সা. কে এক সম্মানজনক শুভযাত্রার মাধ্যমে সম্মানিত করা হয়েছে। যা নবী কাফেলার মধ্য হতে একমাত্র তাঁরই বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল। যার সংক্ষিপ্ত ঘটনা এই-
এক রজনীতে মহানবী সা. হাতীমে কাবায় শায়িত ছিলেন। হযরত জিবরাঈল ও হযরত মীকাঈল আ. এসে বললেন, আমাদের সাথে চলুন।
সাস্থসম্মত উপায়ে তৈরি ১০০%-খাঁটি-ঘি
মহানবী সা. কে বোরাকের উপর আরোহণ করানো হল। যার দ্রুত গতির অবস্থা এই ছিল যে, যে স্থানে তার দৃষ্টি পড়ত সেখানে তার পা পড়ত। এই দ্রুত গতিতে প্রথমে তাঁকে সিরিয়ার মসজিদে আকসা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হল। সেখানে আল্লাহ তায়ালা পূর্ববর্তী সমস্ত নবীদেরকে মহানবী সা. এর সম্মানার্থে (মুজেযাস্বরূপ) একত্রিত করেছিলেন। জিব্রাঈল আ. সেখানে পৌঁছে আযান দিলেন। নামাজের জন্য সমস্ত নবী কাতার সোজা করে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু সবাই অপেক্ষা করতেছিলেন যে, কে নামাজ পড়াবেন। জিব্রাঈল আমীন মহানবী সা. এর পবিত্র হাত ধরে সামনে বাড়িয়েদিলেন। মহানবী সা. সমস্ত নবী, রাসূল এবং ফেরেশতাদের নামায পড়ালেন।
এ পর্যন্ত পৃথিবীর ভ্রমণ ছিল। যা বোরাকে চড়ে হয়েছিল। এরপর তাঁকে ধারাবাহিকভাবে আকাশে ভ্রমণ করানো হয়। প্রথম আকাশে আদম আ. এর সাথে সাক্ষাৎ হয়। দ্বিতীয় আকাশে হযরত ঈসা সা. ও হযরত ইয়াহইয়া আ. এর সাথে সাক্ষাৎ হয়। তৃতীয় আকাশে হযরত ইউসুফ আ. এর সাথে সাক্ষাৎ হয়। চতুর্থ আকাশে হযরত ইদ্রীস আ. এর সাথে সাক্ষাৎ হয়। পঞ্চম আকাশে হযরত হারুন আ. এর সাথে সাক্ষাৎ হয়। ষষ্ঠ আকাশে হযরত মূসা আ. এর সাথে সাক্ষাৎ হয় । সপ্তম আকাশে হযরত ইব্রাহীম আ. এর সাথে সাক্ষাৎ হয় । [বুখারী, ফতহুল বারী পূঃ ৪৮৫]
এরপর মহানবী সা. সিদরাতুল মুনতাহার দিকে গমন করলেন। রাস্তায় হাউযে কাওসারের কাছ দিয়ে অতিক্রম করলেন। জান্নাতে প্রবেশ করলেন। সেখানে কুদরতের হাতের এমন আশ্চর্য জিনিস প্রত্যক্ষ করলেন, যা কোন চোখ আজ পর্যন্ত দেখেনি। কোন কান শোনেনি। আর না কোন মানুষের ধারণা সে পর্যন্ত পৌঁছেছে । তারপর মহানবী সা. এর সামনে দোযখ উপস্থিত করা হয়েছে। যা সব ধরনের শাস্তি এবং প্রচণ্ড আগুনে পরিপূর্ণ ছিল। যার কাছে লোহা এবং পাথরের মত কঠিন জিনিসের কোন অস্তিত্ব ছিল না।
সেখানে তিনি এক দল মানুষকে দেখলেন যারা মৃত প্রাণী খাইতেছে। জিজ্ঞেস করলেন, ওই সব লোক কারা? জিব্রাঈল আ. বললেন, এরা মানুষের গোশত ভক্ষণ করত। (তাদের গীবত করত) অতঃপর দোযখের দরজা বন্ধ করে দেয়া হল। এরপর মহানবী সা. সামনে বাড়লেন। হযরত জিব্রাঈল আমীন সেখানে থেমে গেলেন। কেননা, তার সেখান থেকে সামনে বাড়ার অনুমতি ছিল না। ঐ সময় আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সাথে তাঁর যিয়ারত নসীব হয়। সঠিক এটাই যে, দীদার অন্তর দিয়ে হয়নি বরং স্বচক্ষে হয়েছে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস এবং সকল গবেষক সাহাবী ও ইমামদের এটাই সিদ্ধান্ত। মহানবী সা. সেজদায় পড়ে গেলেন। সারা বিশ্বের মালিকের সাথে পরস্পর কথোপকথনের মর্যাদা অর্জন হল। সে সময়ই নামায ফরজ হল। এরপর মহানবী সা. প্রত্যাবর্তন করলেন। সেখান থেকে বোরাকের উপর সাওয়ার হয়ে মক্কা মুয়ায্যামায় ফিরে আসলেন।
রাস্তায় বিভিন্ন স্থানে কুরাইশদের তিনটি ব্যবসায়িক দলের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন। যাদের কতককে মহানবী সা. সালাম দিয়েছিলেন। তারা মহানবী সা. এর আওয়াজ চিনতে পেরেছিল এবং মক্কায় ফিরার পর তারা তার সাক্ষ্য দিয়েছিল। প্রভাত হওয়ার পূর্বেই এই সফর শেষ হয়েছিল।