Narrow selection

অসুস্থ ব্যক্তির নামাযের বর্ণনা


05:27:22 12/03/2023

অসুস্থ ব্যক্তির নামাযের বর্ণনা

হযরত ইমরান ইবনে হোসাইন [রাঃ] বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃ] বলেছেন, দাঁড়িয়ে নামায পড়, তা না পারলে বসে পড়, তাও না পারলে শুয়ে পড়।” [বুখারী]

নামায় এমনই মহা গুরুত্বপূর্ণ রুকন যে, ঘরে সফরে, রোগে-শোকে, সুখে-দুঃখে অর্থাৎ জীবনের সর্ববস্থায় এমনকি মৃত্যুশয্যায়ও তা আদায় করা অপরিহার্য। সজ্ঞানে ও সুস্থ মস্তিষ্কে নামায ছাড়ার কোনই অনুমতি নেই। অবশ্য সফরের ন্যায় অসুখের ক্ষেত্রেও শরীয়ত কিছু শিথিলতা প্রদান করেছে। আলোচ্য হাদীসে সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে।

মাসআলা : নাক থেকে বা যখম থেকে যদি অনবরত রক্ত ঝরে কিংবা যদি অনবরত পেশাব ঝরতে থাকে এবং ওযু করে ফরয নামাযটুকু আদায় করার মত বিরতিও না হয় তাহলে তাকে ‘মাযুর' বা অপারগ বলে গণ্য করা হবে। সে প্রত্যেক নামাযের সময় ওযু করবে এবং যতক্ষণ ঐ নামাযের সময় থাকবে ততক্ষণ তার ওযু বাকী থাকবে। অবশ্য ওযু ভংগের অন্য কোন কারণ দেখা দিলে ওযু ভেঙ্গে যাবে। যেমন, অনবরত পেশাব ঝরার কারণে মা'যূর ব্যক্তি জোহরের সময় ওযু করল, অনবরত পেশাব ঝরা সত্ত্বেও জোহরের সময় শেষ হওয়া পর্যন্ত এই ওযু কার্যকর থাকবে। তবে ঘুমালে বা পায়খানা করলে বা রক্ত বের হলে ওযূ ভেঙ্গে যাবে এবং পূনরায় ওযু করতে হবে।

সাহু সেজদার নিয়ম

মাসআলা : মা'যুর ব্যক্তিকে প্রতি নামাযের সময়ে নতুনভাবে ওযু করতে হবে। তবে নামাযের সময় শেষ হওয়া পর্যন্ত কাযা নামাযসহ যাবতীয় সুন্নত নফল যত ইচ্ছা পড়তে পারবে।

মাসআলা : যদি কোন নামাযের পূর্ণ ওয়াক্তের মধ্যে একটুকু সময় রক্ত বা পেশাব ঝরা বন্ধ থাকে যে, ওযু করে ফরযটুকু আদায় করা সম্ভব, তাহলে তাকে মা'যূর বলা হবে না। এ ব্যাপারে অনেকে ভুল করে থাকে। কাজেই ভালভাবে বুঝে নেয়া উচিত।

মাসআলা : দাঁড়িয়ে নামায পড়া ফরয তবে ওজরবশতঃ দাঁড়াতে না পারলে বসেই নামায পড়বে এবং বসে বসে রুকু সেজদা করবে। রুকু সিজদা করতে সক্ষম না হলে মাথার ইশারা দ্বারা রুকু সিজদা আদায় করবে এবং সিজদার জন্য রুকুর তুলনায় একটু বেশি ঝুকবে। তবুও কোন অবস্থাতেই নামায ছাড়বে না।

মাসআলা: যদি দাঁড়াতে গেরে বেশ কষ্ট হয় অথবা অসুখ বৃদ্ধির আশংকা থাকে তাহলে বসে নামায পড়া জায়েয।

মাসআলা : যদি দাঁড়ানো সম্ভব হয় কিন্তু রুকু সিজদাতে যাওয়া সম্ভব না হয় তাহলে দাঁড়িয়ে নামায পড়বে এবং মাথার ইশারা দ্বারা রুকু সিজদা আদায় করবে। ইচ্ছা করলে বসে বসে এবং রুকু সিজদা ইশারায় আদায় করে নামায পড়তে পারে। উভয় পদ্ধতিতে নামায পড়ার অনুমতি রয়েছে। তবে বসে পড়াই উত্তম।

মাসআলা : বসার মত শক্তি যদি না থাকে তবে পিছনে বালিশ ইত্যাদিতে হেলান দিয়ে অর্ধশায়িত অবস্থায় পা দু'টো কিবলার দিকে সোজা করে আর সম্ভব হলে হাটুদ্বয় খাড়া রেখে মাথার ইশারা দ্বারা সিজদা আদায় করবে এবং রুকুর তুলনায় সিজদার সময় মাথা বেশি ঝুকাবে। যদি অর্ধশায়িত হওয়ার মত শক্তিও না থাকে তবে ক্বিবলার দিকে পা সোজা করে চিৎ হয়ে শয়ন করবে এবং মাথার নীচে উঁচু বালিশ দিবে যাতে মুখ ঊর্ধ্বমুখী না হয়ে কিবলামুখী হয়। অতঃপর মাথার ইশারা দ্বারা নামায আদায় করবে এবং সিজদার সময় রুকুর তুলনায় মাথা বেশি আগে বাড়াবে। অবশ্য কেবলামুখী হয়ে [ডান বা বাম] পার্শ্ব শয়ন করে নামায পড়াও জায়েয কিন্তু চিৎ হয়ে পড়াই অধিক উত্তম।

মাসআলা : অসুস্থ ব্যক্তির পাঁচ বা তার কম ওয়াক্ত বেহুশ অবস্থায় অতিবাহিত হলে এ নামাযগুলোর ক্বাযা আদায় করতে হবে। পুরা ছয় ওয়াক্ত অতিবাহিত হয়ে গেলে সেগুলোর কাযা আদায় করতে হবে না।

মাসআলা : নামাযের মধ্যেই যদি এমন কোন অসুবিধা দেখা দেয় যার কারণে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব না হয়, তবে অবশিষ্ট নামায় বসে পড়বে। আর রুকু সিজদা করা সম্ভব না হলে মাথার ইশারা দ্বারা আদায় করবে। যদি বসার মত সামর্থ্যও না থাকে, তাহলে বাকী নামায শুয়ে আদায় করবে।

মাসআলা : অসুস্থতার কারণে কেউ যদি বসে নামায পড়ে, অতঃপর নামাযের মধ্যেই সুস্থ হয়ে যায় তবে অবশিষ্ঠ নামায দাঁড়িয়ে পুরা করবে।

মাসআলা : অসুস্থতার কারণে কেউ যদি ইশারায় রুকু সিজদাসহ নামায পড়ে, অতঃপর নামাযের মাঝেই পুনঃসুস্থ হয়ে রুকু সিজদা আদায়ে সক্ষম হয় তবে নামায ভেঙ্গে যাবে এবং পুনরায় তা আদায় করতে হবে।

মাসআলা : মহান আল্লাহ না করুন যদি অর্ধাংগ রোগ বা অন্য কারণে এমন অসুস্থ হয়ে পড়ে যে, ইস্তিঞ্জার পানি ব্যবহার করা সম্ভব নয় তাহলে কাপড় বা ঢিলা ব্যবহার করবে। তাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে এ অবস্থায়ই নামায আদায় করবে। কাযা করবে না ।


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color