হযরত আয়েশা (রা.) এর জীবনী
নাম : আয়েশা
উপনাম : উম্মে আবদুল্লাহ
উপাধি : সিদ্দিকা, হুমায়রা
পিতার নাম : আবু বকর আব্দুল্লাহ ইবনে ওসমান আবু কুহাফা
মাতার নাম : উম্মে রুমান বিনতে আমের। তিনি পিতৃকুলের দিক থেকে বনী তাইম এবং মাতৃকুলের দিক থেকে কেনানা গোত্রের ছিলেন।
জন্ম : তিনি হিজরতের আট বা নয় বছর পূর্বে জন্মগ্রহণ করেন।
রসুলুল্লাহ (স.) এর সাথে বিবাহ : আসমানী নির্দেশে মাত্র ৬/৭ বছর বয়সে রসুলুল্লাহ (স.) তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেন এবং হিজরতের তিন বছর পূর্বে শাওয়াল মাসে মক্কায় তাঁকে বিবাহ করেন। এরপর দ্বিতীয় হিজরির শাওয়াল মাসে অর্থাৎ আকদের ১৮ মাস পর ৯ বছর বয়সে একমাত্র কুমারী নারী আয়েশা (রা.) এর সাথে ঘর সংসার শুরু করেন।
গুণাবলী : রাসুলুল্লাহ এর পবিত্র স্ত্রীদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বুদ্ধিমতি এবং গভীর জ্ঞানের অধিকারী। তিনি একাধারে ফিকাহবিদ, হাদিস বিশারদ, মুফাসসির, ভাষাবিদ এবং ইতিহাসে সুপন্ডিত ছিলেন। বহু কবির বড় বড় কাসিদা (কবিতা) তার মুখস্থ ছিল। প্রিয় নবীর জীবনের বহু ঘটনা ও যুদ্ধ-বিগ্রহ সম্পর্ক তিনি সর্বাধিক ওয়াকিফহাল ছিলেন।
রসুলুল্লাহ (স.) এর ওফাতের পর রাজনীতিতেও তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। হযরত আলী (রা.) এর খিলাফতকালে সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলে তিনি খলিফার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। এবং জঙ্গে জামাল (উষ্ট্রের যুদ্ধ) বিরোধী দলের নেতৃত্ব দেন। তার উপর অপবাদের পবিত্রতা বর্ণনায় আয়াত অবতীর্ণ হয়। জিব্রাইল (আ.) এর পক্ষ থেকে তার উপর সালাম প্রেরিত হয়।
হাদীস শাস্ত্রে তার অবদান : হাদীস শাস্ত্রে উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) এর অবদান চির স্মরণীয় হয়ে আছে। সর্বাধিক হাদীস বর্ণনাকারীদের মধ্যে তিনি অন্যতম। রসুলুল্লাহ (স.) এর ব্যক্তিগত কর্ম এবং গৃহ অভ্যন্তরে যা-কিছু তিনি করতেন সে সম্পর্কে আয়েশা (রা.) এর বর্ণনা প্রণিধানযোগ্য। বহুসংখ্যক সাহাবী ও তাবেয়ী তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। সাহাবাদের মধ্যে কোন বিষয়ে মতভেদ দেখা দিলে তারা তার শরণাপন্ন হতেন। ভাগ্নে ওরওয়া ইবনে জুবায়ের এবং ভাতিজা কাসেম ইবনে মুহাম্মদ তার থেকে অধিক সংখ্যক হাদিস বর্ণনা করেছেন।
তার বর্ণিত হাদিস সংখ্যা : তার বর্ণিত হাদিস সংখ্যা ২২১০। ইমাম বুখারী ও মুসলিম যৌথভাবে ১৭৪টি ইমাম বুখারী এককভাবে ৫৪টি এবং ইমাম মুসলিম এককভাবে ৫৮টি হাদিস বর্ণনা করেছেন।
ইন্তেকাল : নির্ভরযোগ্য বর্ণনা অনুযায়ী উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) ৬৫ বছর বয়সে ৫৭ হিজরীর ১৭ই রমজান মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মদিনায় ইন্তেকাল করেন। ওসিয়াত অনুযায়ী রাতেই জান্নাতুল বাকিতে তাকে সমাহিত করা হয়। আবু হুরায়রা (রা.) তার নামাজে জানাজায় ইমামতি করেন।