ওষুধ ছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ

ওষুধ ছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ : কিছু নিয়ম মানলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। উচ্চ রক্তচাপ অনেক রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে, যার মধ্যে রয়েছে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, প্যারালাইসিস-এর মতো কিছু ভয়াবহ সমস্যা। তাই আসুন আমরা আজ থেকে এই মুহূর্ত থেকে সচেষ্ট হই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে। কিন্তু কীভাবে?

  • আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওজন কত হওয়া উচিত তা জেনে নিন। অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন। আর ওজন ঠিক থাকলে তা যাতে কোনো ক্রমেই না বেড়ে যায় সে ব্যাপারে সচেষ্ট হোন।
  • অতিরিক্ত লবণ খাবেন না। ভাতের সাথে কাঁচা লবণ খাওয়া বন্ধ করুন। হয়তো যারা বেশি খেতে অভ্যস্ত তাদের কিছুটা অসুবিধা হবে তবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে লবণ কম খাওয়া জরুরি। লবণাক্ত খাবার; যেমন পনির ও এ জাতীয় খাবার পরিহার করুন।
  • ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ করুন ।
  • আঁশজাতীয় খাবার প্রতিদিন গ্রহণ করুন। শাক-শবজি ও ফলে আঁশ রয়েছে। এতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং রক্তের চর্বির পরিমাণ কমবে।
  • প্রতিদিন ২-৩ কোয়া কাঁচা রসুন খাওয়ার চেষ্টা করুন। রসুন খুবই উপকারী। রসুনের ক্যাপসুল পাওয়া যায়, সেটাও খেতে পারেন।
  • প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় মাছ রাখুন। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ। মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাট এসিড। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও হৃদযন্ত্রকে সচল রাখতে অনন্য। চাঁদা, টুনা বা যে কোনো মাছ খান।
  • পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খান। পাকা কলা, পেয়ারা, আলুতে রয়েছে পটাশিয়াম। আর দুধ, ছোট মাছে পাবেন ক্যালসিয়াম। বাজারে হাই ক্যালসিয়াম দুধ পাবেন। কেননা, প্রতিদিন ৮০০ মি. গ্রা. ক্যালসিয়াম প্রয়োজন ।
  • নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন। সকালে বা বিকালে কিছুটা সময় খোলা হাওয়ায় হেঁটে বেড়ালে মনও প্রফুল্ল থাকে। সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালাতেও পারেন।
  • চা-কফি কম পান করুন। আর কফি পানে অভ্যস্ত না হলে একেবারেই পান করবেন না । চা-কফি রক্তচাপ বৃদ্ধি করে।
  • রেগে গেলে আমরা অনেকেই চেচামেচি করি। এতে রক্তচাপ বেড়ে যায়, তাই যাই
  • ঘটুক না কেন নিজের স্বার্থেই ধীর, স্থিরভাবে কথা বলুন। একদম চেঁচামেচি করবেন না। 

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। কারণ এক্ষেত্রে ঘটতে পারে মারাত্মক সব অসুখ। আবার যাদের উচ্চ রক্তচাপের জন্য নিয়মিত ওষুধ খেতে হয় তারাও উপরের ১০টি নিয়ম মেনে চললে রক্তচাপ কমবে। আর যাদের এখনো এ সমস্যা নেই কিংবা হওয়ার ঝুঁকি আছে তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। সর্বোপরি মানসিক চাপ বা অবসাদ পরিহার করতে হবে। নিজের জন্য কিছু বাড়তি সময় দিন। একদম সারাক্ষণ কাজের মাঝে ডুবে থাকবেন না। হালকা ব্যায়াম, খেলাধুলা কিংবা বেড়ানো খুব জরুরি। পছন্দসই বই পড়ুন, বাগান করুন কিংবা কোনো পশুপাখি পালন করুন। এতে সময় ভালো কাটবে, মানসিক চাপ কমবে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।

হার্ট অ্যাটাকের রিস্ক ফ্যাক্টর বা ঝুঁকি

কিছু বিশেষ ফ্যাক্টর হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের জন্য দায়ী। এ কারণগুলোকেই রিষ্ক ফ্যাক্ট বলা হয়। আসুন এবার জেনে নেয়া যাক হার্ট অ্যাটাকের রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো। যথা :

  • উচ্চ রক্তচাপ
  • রক্তে চর্বি বা কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি
  • ডায়াবেটিস
  • সিগারেট খাওয়া বা ধূমপান
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ
  • বংশে হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস
  • শারীরিক পরিশ্রমের অভাব
  • অতিরিক্ত ওজন
  • টাইপ ‘এ’ পারসোনালিটির মানুষ, যারা সবসময় অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকেন ও কোনো লক্ষ্যের পিছনে ছুটছেন।
  • নারীদের তুলনায় পুরুষেরা বেশি আক্রান্ত হন।
  • বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

হৃদরোগ থেকে বাঁচার উপায়

কিডনি রোগের লক্ষণ ও করণীয়

আমাদের ইউটিউব ইউটিব চ্যানেল

Leave a Comment