নামাযের জরুরী মাসআলা কি কি?

নামাযের বাহিরে ও ভিতরে মোট ১৩টি ফরয রয়েছে। 

যথা,

[১] শরীর পাক হওয়া ।

[২] কাপড় পাক হওয়া।

[৩] সতর ঢাকা। অর্থাৎ পুরুষদের নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত আর স্ত্রীলোকের চেহারা হাতের কব্জি ও পায়ের টাখনু ব্যতীতসমস্ত শরীর ঢাকতে হবে।

[৪] নামাযের জায়গা পাক হওয়া।

[৫] নামাযের সময় হওয়া।

[৬] কিবলামুখী হওয়া ।

[৭] নামাযের নিয়ত করা।

[৮] তাকবীরে তাহরীমা বলা।

[৯] দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া।

[১০] কিরাআত পড়া। অর্থাৎ একটি বড় আয়াত অথবা তিনটি ছোট আয়াত অথবা একটি ছোট সূরা পাঠ করা ।

[১১] রুকু করা 

[১২] সিজদা করা। 

[১৩] শেষ বৈঠক করা

ইচ্ছাক্রমে বা ভুলক্রমে যে কোন একটি ফরয বাদ পড়ে গেলে নামায বাতিল হয়ে যাবে, সিজদায়ে সোহ দিলেও নামায হবে না। বরং নামায পুনুরয় আদায় করতে হবে।

নামাযের ওয়জিব সমূহ

[১] ফাতেহা তথা আলহামদু শরীফ পড়া।

[২] আলহামদুর সাথে অন্য কোন সূরা বা সূরার অংশ যোগ করা। 

[৩] আগে ফাতিহা এবং পরে অন্য সূরা পড়া ।

[৪] ফরয নামাযের প্রথম দু’ রাকাতে কিরাত পড়া। 

[৫] রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো

[৬] দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসা।

[৭] প্রথম বৈঠক করা।

[৮] আত্তাহিয়্যাতু পড়া।

[৯] সালাম বলে নামায শেষ করা।

[১০] ইমামের জন্য মাগরিব ও এশার প্রথম দু’ রাকাতে এবং ফজর, জুমা, দুই ঈদ ও তারাবীহর সব রাকাতে কিরাত উচ্চস্বরে পড়া।

[১১] বিতিরের নামাযে দু’আ কুনূত পড়া।

[১২] দু’ ঈদে অতিরিক্ত ছয় তকবীর বলা।

উপরোক্ত ওয়াজিবগুলোর যে কোন একটি ভুলবশত ছুটে গেলে সিজদায়ে সহো করা ওয়াজিব, কিন্তু স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিলে নামায পুনরায় পড়া ওয়াজিব।

নামাযের সুন্নত সমূহ

[১] তকবীরে তাহরীমা বলার সময় উভয় হাত উঠান।

[২] পুরুষের নাভীর নীচে এবং মহিলাদের বুকের উপর হাত বাঁধা। 

[৩] ছানা শেষ পর্যন্ত পড়া ।

[৪] ‘আউযু বিল্লাহ’ ‘বিসমিল্লাহ’ [সম্পূর্ণ] পড়া।

[৫] নামাযের এক রুকন থেকে আর এক রুকনে যেতে আল্লাহু আকবার বলা ।

[৬] রুকু থেকে উঠতে سمع الله لمن حمده এবং উঠে ربنا لك الحمد বলা ।

[৭] রুকুতে কমপক্ষে তিনবার سبحان ربى العظيم বলা।

[৮] সিজদাতে কমপক্ষে তিনবার سبحان ربى الاعلى বলা।

[৯] দু’ সিজদার মাঝে এবং আত্তাহিয়্যাতুর সময় পুরুষের বাঁ পায়ের উপর বসে ডান পা সোজা করে রাখা আর মহিলাদের ডানদিকে উভয় পা বের করে দিয়ে বাম নিতম্বের উপর বসা।

[১০] দরূদ শরীফ পড়া।

[১১] দরূদ শরীফের পর মাছনূন দোয়া পড়া।

[১২] সালামের সময় উপস্থিত ফেরেশতা, মুক্তাদী এবং জিন্নাতের

নিয়ত করা ।

নামাযের মুস্তাহাব সমুহ :

[১] কাশি আসলে যথসম্ভব বাধা দিয়ে রাখা ।

[২] হাই আসলে মুখ বন্ধ করা।

[৩] দাঁড়ানো অবস্থায় সিজদার স্থানে রুকুতে পায়ের দিকে, সিজদায় নাকের দিকে, বসা অবস্থায় কোলের দিকে এবং সালামের সময় কাঁধের উপর দৃষ্টি রাখা ।

নামায ভঙ্গের কারণ সমূহ

[১] নামাজে অশুদ্ধ পড়া।

[২] সালাম করা বা সালামের জওয়াব দেয়া।

[৩] কারো হাঁচির জওয়াবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা ।

[৪] দুঃসংবাদ শুনে ‘ইন্না লিল্লাহ, সুসংবাদ শুনে ‘আলহামুদু লিল্লাহ’ কিংবা আশ্চর্য হয়ে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা।

[৫] দুঃখে বা কষ্টে উহ্ আহ্ শব্দ করা। 

[৬] কুরআন শরীফ দেখে পড়া।

[৭] সূরা কেরাতে এমন ভুল করা যাতে নামায ফাসেদ হয়ে যায়।

[৮] আমলে কাছীর করা অর্থাৎ উভয় হাতে কোন কাজ করা কিংবা এমন কাজ করা যা দেখে মনে হয় যে এ ব্যক্তি নামায পড়ছে না।

[৯] ইচ্ছায় বা ভুলে খাওয়া বা পান করা।

[১০] কিবলার দিক থেকে বুক সরে যাওয়া।

[১১] ব্যাথ্যায়, বিপদে বা শোকে শব্দ করে কাঁদা।

[[১২] পাশের লোক শোনার মত শব্দ করে হাসা 

(১৩) নামাজের মধ্যে কথা বলা।

(১৪) অ প্রয়োজনে কাশা।

(১৫) তিন তাসবিহ্ পরিমান সতর খুলে থাকা।

(১৬) মুক্তাদি ব্যতিত অপর লোকের লুকমা নেওয়া।

(১৭) নাপাক জায়গা সেজদা করা।

(১৮) নামাজে সাংসারিক কোন কিছু প্রার্থনা করা।

(১৯) ইমামের আগে মুক্তাদি দাড়ানো

নামাযের মাকরূহ সমুহ

[১] কোমরে হাত রাখা।

[২] কাপড় গুটানো ।

[৩] শরীর অথবা কাপড় নিয়ে খেলা করা

[৪] আঙ্গুল মটকান।

[৫] ডানদিকে অথবা বা দিকে ঘাড় ফেরান।

[৬] আড়মোড়া ভাংগা ।

[৭] কুকুরের মত বসা।

[৮] চাদর ইত্যাদি ঝুলিয়ে রাখা অর্থাৎ পেঁচিয়ে না পরা।

[৯] বিনা ওজরে আসন ধরে বাসা।

[১০] সামনে, মাথার উপর অথবা পরিহিত কাপড়ে ছবি থাকা ।

[১১] পেশাব, পায়খানার বেগ নিয়ে বা ক্ষুধা নিয়ে নামায পড়া।

Leave a Comment