শিশুর কান পাকা রোগে করণীয়

শিশুর কান পাকা রোগে করণীয়: আমাদের দেশে অনেক শিশু কানপাকা রোগে ভুগে থাকে। হাসপাতালগুলোতে দেখা যায় বাবা-মা তাদের বাচ্চাদের প্রায়ই নিয়ে আসনে কানপাকা রোগের জন্য। প্রাথমিক পর্যায়ে কানপাকা রোগের কারণ জানা থাকলে বাবা-মারা বিশেষ সতর্ক থাকতে পারেন এ ব্যাপারে। কারণ কানপাকা এক বিশ্রী রোগ, বিশেষ করে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে। কান পাকলে কানে প্রচণ্ড ব্যথা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে থাকে। কোনো এক পর্যায়ে কানের পর্দা ফুটো হয়ে পানি বেরিয়ে আসে। কানে অস্বস্তির কারণে বাচ্চারা ভীষণ কাঁদতে থাকে। বাচ্চার জ্বর জ্বর ভাব থাকে এবং খাবারে অনীহা প্রকাশ পায় এমন হয় যে বাচ্চারা একদম খেতে চায় না। বাচ্চারা এ সময় কানে কম শোনে, কেউ কেউ একেবারে শুনতে পায় না।

কান পাকার কারণ

জন্ম থেকে ২ বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কান পাকার প্রধান কারণ হলো বাচ্চাকে ভুল পদ্ধতিতে খাওয়ানো। চিৎ করে শুইয়ে বুকের দুধ কিংবা ফিডার খাওয়ানোর কারণে কান পাকে। মাকে বসে বসে দুধ খাওয়াতে হবে। এছাড়া ঘনবসতিপূর্ণ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাচ্চাদের বেশি কান পাকে। ঠাণ্ডা লাগলে বিশেষত শীতকালে কানপাকা রোগ বেশি পরিলক্ষিত হয় ।

২ বছর থেকে ৬ বছরের বাচ্চাদের কান পাকে এডিনয়েড গ্রন্থি সংক্রমণের কারণে। এই গ্রন্থিতে সংক্রমণ হলে শ্রুতিনালী বন্ধ হয়ে যায়, যার পরিণতিতে কান পাকে। বাচ্চাদের নাকের সমস্যা থেকেও কানপাকা রোগ দেখা দিতে পারে।

কানপাকার চিকিৎসা

কান পাকলে যত দ্রুত সম্ভব তার চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুবা কানপাকা থেকে মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত কান সর্বদা পরিষ্কার রাখতে হবে। একটি পরিষ্কার শলাকা ছয় ইঞ্চি পরিমাণ ভেঙে তার মাথায় পরিষ্কার শুকনো তুলো পেঁচিয়ে তা দিয়ে দিনে ৮ থেকে ১০ বার কান পরিষ্কার করতে হবে। কান পরিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শমতো অ্যান্টিবায়োটক খেতে হবে। কানের পুঁজ কালচার করে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াই উত্তম। অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে অ্যান্টিহিস্টামিনও খেতে হবে। কানে ১০ থেকে ১৪ দিন অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ দিতে হবে।

সাধারণত ওষুধেই কানপাকা রোগ ভালো হয়ে যায়। তবে কারো কারো বারবার কান পাকতে থাকে, ওষুধে ভালো হলেও কিছুদিন পর আবার কান পাকে। এক্ষেত্রে আগে একটি ন্যাসোফেরিংক্সের এক্সরে করে দেখতে হবে তার এডিনয়েড গ্রন্থি বড় কি-না। কানের একটি এক্সরে (এক্সরে মাসটয়েড) করে দেখতে হবে কানের কতটুকু ক্ষতি হয়েছে। তখন অপারেশনের মাধ্যমে এডিনয়েড গ্রন্থি ফেলে দিলে এবং সেই সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে কানপাকা ভালো হয়ে যায়। ক্ষেত্রবিশেষে রোগীর মাসটয়েড এক্সপ্লোরেশন’ অপারেশনের প্রয়োজন হয়।

জটিলতা

  • কানপাকা রোগের চিকিৎসা ঠিকমতো না করালে রোগীর স্বাস্থ্যগত অনেক সমস্যা দেখা দেয়। এসব সমস্যা বা জটিলতার মধ্যে রয়েছে-
  • কানের পেছনটা ফুলে পুঁজ জমা কানের সামনে ফুলে পুঁজ জমা কানের লতির নিচে ফুলে পুঁজ জমা
  • মুখ অসাড় হওয়া ও বেঁকে যাওয়া মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হওয়া মস্তিষ্কে ফোঁড়া হওয়া ।
  • কানপাকা রোগ যেহেতু শিশুদের খুবই সাধারণ একটি রোগ, তাই এক্ষেত্রে সমস্যা হলে অতিসত্ত্বর কোনো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

স্ট্রোক এড়াবেন কীভাবে

হৃদরোগ থেকে বাঁচার উপায়

কিডনি রোগের লক্ষণ ও করণীয়

আমাদের ইউটিউব ইউটিব চ্যানেল

Leave a Comment