হৃদরোগ এড়ানোর ৭টি উপায়
ধূমপান বন্ধ করুন
ধূমপায়ীরা বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। ধূমপান ছেড়ে দেবার এক বছরের মাথায় হৃদরোগের ঝুঁকি শতকরা ৫০ ভাগ কমে যায়। আর একজন ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দেবার ১৫ বছরের মাথায় হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি একজন অধূমপায়ীর পর্যায়ে চলে যায়। ধূমপান ছেড়ে দেবার জন্য আপনার নিজের ইচ্ছাই যথেষ্ট।
লবণ কম খাবেন
অতিরিক্ত লবণ বা লবণযুক্ত খাবার খাবেন না। পাতে কাঁচা লবণ খাওয়া পরিহার করুন। অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। সয়াসস এবং টেস্টিং সল্ট অর্থাৎ আজিনোমাটো দেয়া খাবারও বেশি খাওয়া ঠিক না। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে অনেক সময় আপনি চিন্তিত নাও হতে পারেন। কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ থেকে হার্ট ফেইলিউর এবং স্ট্রোক হতে পারে। সুতরাং আজ থেকেই লবণ কম খান।
বেশি করে শাক-সবজি ও মাছ খান
সবুজ শাক সবজি ও মাছ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এতে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড । আর খাসি-গরুর মাংসের সম্পৃক্ত চর্বি রক্তের চর্বির মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। সেই সাথে ধমনীগুলোকে সরু ও রক্তপরিবহনে অচল করে তোলে। তাই সবুজ শাকসবজি, মাছ খান, হৃদরোগ এড়ান।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
নিয়মিত ব্যায়াম হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনে। ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম যারা করেন না তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি অনেক। নিয়মিত অল্প সময় ব্যয়াম করলেও তা শতকরা ৪০ ভাগ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমে যাওয়া রোধ করতেও শারীরিক পরিশ্রমের প্রয়োজন আছে।
মানসিক চাপ কমান
মানসিক চাপ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। কর্মক্ষেত্রে ও বাড়িতে মানসিক চাপ পরিহার করুন। নিজের জন্য সময় দিন। হালকা গান শুনুন, বই পড় ন কিংবা বেড়াতে যান। মনে রাখবেন মানসিক চাপ যেখানে আপনার এতটা ক্ষতি করছে, তাই সেটা এড়ানো আপনার দায়িত্ব।
আপনার শিশুর কথা ভাবুন
হৃদরোগ রাতারাতি বা হঠাৎ হয় না। তাই আপনার বাচ্চাদের দিকে নজর দিন। তাদেরকে এমন করে গড়ে তুলুন যাতে তারা হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে পারে, তাদের মাঝে হৃদরোগের ঝুঁকি না থাকে। শিশুদের শাক-সবজি ও মাছ সমৃদ্ধ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। তাদের আদর্শ ওজনের মাঝে রাখুন ও নিয়মিত ব্যায়াম ও খেলাধুলা করতে দিন। খেয়াল রাখুন তারা যেন শুধু টিভি বা কম্পিউটারের সামনে বসে না থাকে। শিশুদের ভবিষ্যতের হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে বাবা-মায়েদেরকে। তাহলে হৃদরোগ এড়ানো সম্ভব হবে।
নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করান
যাদের পরিবারের কেউ না কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন তারা সাবধান হন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। পরিবারে কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন এমন হলে তাদের নিকটাত্মীয়দের হৃদরোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি রয়েছে। তাই তারা নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাবেন।
হৃদরোগ এড়াতে কী খাবেন, কী খাবেন না
কী খাবেন
- নিয়মিত শাকসবজি ও ফল
- ছোট মাছ ও সামুদ্রিক মাছ
- বাড়িতে তৈরি টক দই
- মুরগির মাংস
- ডাল, ছোলা
- সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেল এবং
- ক্রিম ছাড়া বিস্কুট; যেমন—ক্র্যাকার ইত্যাদি।
কী খাবেন না।
- গরু ও খাসির মাংস। কিংবা খুব হিসাব করে মাসে এক দিন খেলেও খেতে পারেন ঘি, মাখন, পনির
- ডিমের কুসুম বাদ দিলে ভালো, অথবা সপ্তাহে দুটোর বেশি ডিম
- কেক, পেস্ট্রি
- চকলেট
- বাড়তি লবণ
- ডায়াবেটিস থাকলে ভাত, আলু মেপে খাবেন এবং
- নারকেল কম খাবেন।