Narrow selection

শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে পার্থক্য কি? শিয়ারা কি কাফের?


12:25:55 06/16/2024

শীআ শব্দটির আভিধানিক অর্থ দল,অনুসারী,সমর্থক ও সাহায্যকারী। বর্তমানের পরিভাষায় শীআ বলা হয় ঐ ব্যক্তিকে যিনি হযরত আলী (রাঃ) ও আহলে বায়ত-এর সমর্থক,ইমামত আকীদায় বিশ্বাসী এবং হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)ও হযরত ওমর (রাঃ) এর চেয়ে হযরত আলী (রাঃ) এর অধিক মর্তবা থাকার প্রবক্তা। শীআদেরকে রাফিজী ও বলা হয়।

 

ইয়ামানের সানআ শহরের জনৈক ইয়াহুদী আলেম ছিল আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা ওরফে উবনে সাওদা। হযরত উছমান (রাঃ) এর খেলাফত কালে সে ইসলাম গ্রহণ করে। তার আসল লক্ষ ছিল নিজেকে মুসলমান বলে জাহির করে মুসলমানদের মধ্যে বিরোধ ও ফাটল সৃষ্টি করে মুসলমানদের মধ্যে ফিৎনা ও গোলযোগ সৃষ্টি করতঃ ভিতর থেকে ইসলামকে বিকৃত ও ধ্বংস করা।

 

সে মদীনায় কিছু দিন কাজ করে সফলকাম হতে না পেরে বসরা গেল। এক সময় সিরিয়া গেল। কিন্তু এসব জায়গায় পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে না পেরে অবশেষে মিসর গমন করল। এখানে সে কিছু লোককে তার দুরভিসন্ধিতে সাহায্যকারী পেয়ে গেল।

 

এই নাম শীআদের ইমাম যায়েদ ইবনে আলী (রাঃ) প্রদান করেন। ১২১ হিজরীতে যখন যায়েদ ইবনে আলী হিশাম ইবনে আব্দুল মালিকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন তখন যুদ্ধ চলাকালীন অবস্থায়ই শীআদের একটি দল তাকে বলেছিল আমরা এই শর্তে আপনার সহযোগিতা করতে পারি যে

 

আপনি হযরত আবূ বকর ও ওমর সম্বন্ধে আপনার মত প্রকাশ করবেন। যায়েদ ইবনে আলী প্রথমতঃ হযরত আবূ বকর ও ওমর (রাঃ) এর জন্য রহমতের দুআ করলেন এবং বললেন ,আমি তাঁদের সম্বন্ধে ভাল কথাই বলব। তখন শীআরা ‍দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল।

 

আকদল হযরত যায়েদ ইবনে আলীর সাথে থাকল আর একদল তার পক্ষ ত্যাগ করল । হযরত যায়েদ ইবনে আলী তখন দলত্যাগী লোকদেরকে সম্বোধন করে বলেছিলেন, অর্থাৎ, তোমরা আমাকে ত্যাগ করলে? এখান থেকেই তাদের নাম হয়ে যায় রাফিজী বা দলত্যাগী।

 

ঐতিহাসিকদের বর্ণনা মতে সে সর্ব প্রথম এই ধোঁয়া ছাড়ল য়ে মুসলমানদের প্রতি আমরা আশ্চর্য লাগে, যারা এ পৃথিবীতে হযরত ঈসা (আঃ) এর পুনরায় আমন করার কথা বিশ্বাস রাখে কিন্তু সাইয়্যিদুল আম্বিয়া মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এ ধরনের পুনরাগমনে বিশ্বাস রাখে না। অথচ তিনি সকল পয়গম্বরের তুলনায় শ্রেষ্ঠ । তিনি অবশ্যই পুনরায় এ পৃথিবীতে আগমন করবেন। অতপর যখন সে দেখল এ কথাটি মেনে নেয়া হয়েছে, তখন সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে হযরত আলী (রাঃ) এর বিশেষ আত্মীয়তার ভিত্তিতে তাঁর প্রতি অসাধারণ ভক্তি ও মহব্বত প্রকাশ করে তাঁর শানে নানারকম বাড়াবাড়ির কথা-বার্তা শুরু করে দিল ।

 

এক পর্যায়ে সে বলল, প্রত্যেক নবীর একজন ওসী বা ভারপ্রাপ্ত থাকেন । নবীর ইন্তেকালের পর সেই ভারপ্রাপ্তই নবীর স্থানে উম্মতের প্রধান হয়ে থাকেন । রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরও নিয়মানুযায়ী একজন ভার প্রাপ্ত থাকার কথা। তিনি কে? তিনি হলেন হযরত আলী (রাঃ) ।

 

সে বলল, তাওরাতেও তাঁকেই ভারপ্রাপ্ত বলা হয়েছে। অতএব রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  এর পর খলীফা হওয়ার অধিকার প্রকৃত পক্ষে হযরত আলী (রাঃ) এর । কিন্তু রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পর চক্রান্ত করে হযরত আলী (রাঃ) এর বিরুদ্ধে চক্রান্ত হয়েছে এবং উছমানকে খলীফা করা হয়েছে, যে এর মোটেই যোগ্য নয়।

 

সে হযরত উছামান (রাঃ) কে অযোগ্য প্রমাণিত করার জন্য তার বিভিন্ন গভর্ণরদের নানান বিষয়ে ত্রুটি বিচ্যুতির দিক তুলে ধরতে থাকল । এভঅবে এক পর্যায়ে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবার অনুসারী একদাল লোক হযরত উছামান (রাঃ) এর বিরুদ্ধে বিদ্রেহী হয়ে উঠল এই বলে যে, উছমান এবং গভর্ণরদের কারণে উম্মতের মধ্যে যে ভ্রষ্টতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে তা দূর করা দরকার।

 

শেষ পর্যন্ত তারা হযরত উছমান (রাঃ) কে হত্যা করল। এবং তারাই তলোয়ারের মুখে হযরত আলী (রাঃ) কে খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণে বাধ্য করল। কিন্তু হযরত উছমান (রাঃ) এর মজলূম সুলভ শাহাদাতের কারণে অথবা এ শাহাদাতের থোদায়ী শাস্তি স্বরূপ মুসলিম উম্মাহ দু দলে বিভক্ত হয়ে পড়ল এবং এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে জঙ্গে জামাল ও জঙ্গে সিফফীনের মত পারস্পরিক যুদ্ধ-বিগ্রহ পর্যন্ত সংঘটিত হল। 

এই জঙ্গে সিফফীনে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবার বিপুল সংখ্যক ভক্ত হযরত আলী (রাঃ) পক্ষে ছিল। তাদেরকে বলা হত শী আনে আলী , সংক্ষেপে শীআ। শীআনে আী কথাটার অর্থ হল আলী র দল। আব্দুল্লাহ ইবনে সাবাই হল শীআ দলের প্রতিষ্ঠাতা।  

 

১. শীআ, আদের ইতিহাসের ইই কলস্ক মুছে ফেলার জন্য কতিপয় শীআি ঐতিহাসিক বলেছেন, আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা নামে ইতিহসে কোন ব্যক্তি অতিবাহিত হয়নি। তার নাম হল একটা কাল্পনিক নাম। বাগদাদ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক মুর্তজাআল-আসকারী গ্রন্থে এরূপ বলেছেন। ডক্টর (অবশিষ্ট টীকা পরবর্তী পৃষ্ঠায় দেখুন) 

 

এই ঐতিহাসিক পেক্ষাপটে শীআ সম্প্রদায় প্রকৃত পক্ষে ছিল একটি রাজনৈতিক দল। যদিও তাদের উদ্ভব হয় রাজনৈতিকভাবে, কিন্তু কালের বিবর্তনে তাদের বিভিন্ন দল বিভিন্ন আকীদা- বিশ্বাস সংক্রান্ত ব্যাপারে অভূতপূর্ব বিতর্ক ও বিভ্রান্তির সূচনা করে। জঙ্গে সিফফীনের সময় থেকেই এই আকীদা-বিশ্বাসগত বিভ্রান্তির সূচনা হয়। জঙ্গে সিফফীনের সময়ে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা ও তার অনুসারীগণ তখনকার বিশেষ পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে হযরত আলী ( রাঃ) এর বাহিনীতে তাঁর সম্পর্কে গোমরাহীমূলক প্রচার শুরু করে।

 

ইবনে সাবা কিছু সংখ্যক মূর্খ ও সরলপ্রাণ লোককে এই সবক দেয় যে হযরত আলী এ পৃথিবীতে খোদার রূপ। তাঁর দেহে খোদায়ী আন্মা রয়েছে এবং তিনিই খোদা। সে আরও বলে, মূলতঃ আল্লাহ নবুওয়াত ও রেসালাতের জন্য আলীকে মনোনীত করেছিলেন । কিন্তু ওহী বাহক ফেরেশতা জিবরাঈল ভুলবশতঃ ওহী নিয়ে মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহর কাছে পৌছে গেলেন। নাউযুবিল্লাহ এভাবেই শীআদের মধ্যে আকীদাগত বিভ্রান্তির সূত্রপাত ঘটতে আরম্ভ করে, পরবর্থিতে যার আরও বিস্তৃতি ঘটে । পরবর্তিতে বিভিন্ন আকীদাগত বিষয়ে তাদের মধ্যে পারস্পরিক বিরোধও দেখা দেয়, যার ফলে শীআদের মধ্যে সৃষ্টি হয় নানান দল উপদল।

 

শিয়ারা কত দলে বিভক্ত? - Sia Koy dole Bivokto

ইমামদের প্রতি শিয়াদের আকিদা কি?

 

নবী রাসুলগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন?

সাহাবাগণ কিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন

আমাদের ইউটিউব ইউটিব চ্যানেল


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color