আদম ও হাওয়া এর তওবা - Adam o Hawa er Tawba
13:58:42 06/12/2024
আদম ও হাওয়া (আ) এর তওবা কবুল হওয়ার ইতিহাস
প্রায় তিনশত বছর অতিবাহিত হল। আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতা জিবরাঈল বললেন, হে জিবরাঈল! তুমি আমার বান্দা হযরত আদম (আ) এর কাচে গিয়ে বল, সে মক্কা শলীফ গিয়ে হজ্জ আদায় করুক। তিনি সঙ্গে সঙ্গে এসে হযরত আদম (আ) এর নিকট উপস্থিত হলেন এবং তাকে আল্লাহর আদেশ জানিয়ে দিলেন। তখন হযরত আদম (আ) আল্লাহর আদেশ পালন করতে সরন্দীপ হতে মক্কা শরীফের দিকে রওয়ানা হলেন। গুলমায়ে কেরাম বলেন যে,আল্লাহ পাক তখন সরন্দীপ হতে মক্কা শরীফ এত নিকটবর্তী করে দিলেন যে, মাত্র ত্রিশবার পদক্ষেপ করেই হযরত আদম (আ) মক্কা শরীফ পৌছে গেলেন।
তিনি সেখানে উপনীত হওয়া মাত্র অগণিত ফেরেশতা তার নিকট উপস্থিত হয়ে বললঃ হে আদম ! আমরা আল্লাহর আদেশে একাধারে দুহাজার বছর ধরে খানায়ে কাবার তাওয়াফ করছি। ঐ সময় খানায়ে কাবার নাম ছিল বাইতুল মামুর। তখন অবশ্য তা কোন প্রকাশ্য বা দৃশ্যমান ঘর আকারে ছিল না, বরং চতুর্থ কিংবা সপ্তম আসমানে বাইতুল মামুর নামে ফেরেশতাদের ইবাদত করার যে মসজিদ আছে, মক্কা শরীফের ঐ জায়গাটি ঠিক তার নিচে অবস্থিত ছিল এবং মসজিদটির ছায়া ঐ জায়গায় পতিত হত। পরবতীকালে হযরত আদম (আ) এর মাধ্যমে এখানে একটি মসজিদ নির্মিত হয় এবং তারই নামকরন করা হয় বাইতুল্লাহ বা কাবা নামে।
হযরত আদম (আ) ঐ জায়গার অদূরে আরাফাতে জবলে রহমত নামক স্থানে গিয়ে বসে পড়লেন। এ সময়ে তিনি শারিরিক ও মানসিক ক্লান্তিতে একেবারে দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন।
আরাফাতের ঐ জায়গা বসে হযরত আদম (আ) অশ্রু ধারা প্রবাহিত করে মহান আল্লাহর দরবারে পুনরায় দোয়ায় মগ্ন হলেন, হে মাবুদ ! আপনি আমার ও আমার স্ত্রী হাওয়ার গুনাহ মাফ করে দিন এবং আমি জানিনা হাওয়া এখন কোথায় কিভাবে আছে। সম্ভবত তারও জানা নেই আমি কোথায় আচি। হে মাবুদ! আপনি আমাদের উভয়ের প্রতি রহমত করুন আমাদের মধ্যে পনর্মিলন ঘটিয়ে আমাদের মনে শান্তি দান করুন।
হযরত আদম (আ) এর দোয়া ফল দায়ক হল, তিনি সম্মুখের প্রান্তরে দেখলেন, জেদ্দার দিক থেকে যেন বিবি হাওয়া ধীরে ধীরে তারেই দিকে আসছেন। এ দৃশ্য দেখে হযরত আদম (আ) আর বসে থাকতে পারলেন না। তিনি দ্রুত এগিয়ে গিয়ে আগমনরত বিবি হাওয়াকে জড়িয়ে ধরে কেদে ফেললেন। হযরত আদম (আ) ও বিবি হাওয়ার মধ্যে দীর্ঘকালের বিচ্ছেদের পর মক্কার যে জায়গাটিতে বসে তাদের সে বিচ্ছেদের পরিসমাপ্তি ঘটেছিল, সে জায়গাটির বর্তমান নাম আরাফাত হলেও তখন কিন্তু এ নাম ছিল না, বরং ঐদিন তাদের পরস্পরের মধ্যে এভাবে দেখা-সাক্ষাৎ সংঘটিত হওয়ার কারণেই তার নাম আরাফাত হয়েছে।
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. এর জীবনী