সালমান ফারসী রা. এর জীবনী - Biography of Salman Farsi
04:54:44 12/15/2023
সালমান ফারসী রা. এর জীবনী
নাম : সালমান।
উপনাম : আবু আব্দুল্লাহ।
পিতার নাম : বযাখশান।
তিনি পারস্যের (বর্তমান ইরানের) রামহুরমুজ নগরীর অধিবাসী হওয়ায় সালমান ফারেসী নামে প্রসিদ্ধ । তাঁর ইরানী নাম ছিল মাহবেহ বা রূযবেহ।
ইসলাম গ্রহণ : সালমান ফারেসী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ইসলাম গ্রহণের ঘটনা বড় চিত্তাকর্ষক এবং বেদনাবিধুর। হাদীসের কিতাবসমূহে তাঁর ইসলাম গ্রহণের ইতিহাস নিজ ভাষ্যে বর্ণিত আছে। তাঁর পৈতৃক ধর্ম ছিল মজুসিয়াত তথা অগ্নিউপসনা। কিন্তু তিনি ছোটবেলা থেকেই ঈসায়ী ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ঘর ছাড়া হন। এবং একের পর এক খৃষ্টান যাজকের সোহবত গ্রহণ করে অবশেষে সিরিয়ায় উপনীত হন। তাঁর সর্বশেষ গুরু মৃত্যুর সময় ওসিয়াত করে যান যে, ইবরাহিম আলাইহিস সালামের দ্বীনে হানীফ অর্থাৎ একত্ববাদের খাঁটি দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য আখেরী নবী দুনিয়ায় আগমন করেছেন।
আখেরী নবীর আগমনের স্থান, আলামত, কার্যক্রম সবকিছু তিনি শাগরেদকে বলে যান। হযরত সালমান ফারসী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু মহাসত্যের সন্ধানে মধ্যআরবের আল-কুরায় আগমন করেন। মরুভূমির অচেনা এই দেশে তিনি প্রবঞ্চনার শিকার হন। রাহবার বিশ্বাসঘাতকতা করে তাঁকে জোরপূর্বক গোলাম বানিয়ে এক ইয়াহুদীর কাছে বিক্রি করে দেয়। সেই ইয়াহুদী তাঁকে মদীনা শরীফ নিয়ে যায়। এর কিছুদিন পরেই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় হিজরত করেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মধ্যে নবুওয়তের আলামতসমূহ প্রত্যক্ষ করে তিনি মুসলমান হয়ে যান। এবং আল্লাহর রাসুলের বিশেষ সহযোগিতায় তিনি দাসত্বের বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ করেন।
বৈশিষ্টাবলী : তিনি ছিলেন অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং মেধাবী। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অতি কাছের মানুষ ছিলেন তিনি। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্তির কথা বলেছেন। সর্বপ্রথম তিনি খন্দকের যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। তিনিই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খন্দক খননের পরামর্শ দিয়েছিলেন। হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর যামানায় তিনি মাদায়েনের গভর্ণর ছিলেন।
হাদীস শাস্ত্রে তাঁর অবদান : রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তিনি মোট ৬০ টি হাদীস রেওয়ায়েত করেছেন। প্রসিদ্ধ হাদীসের কিতাবসমূহে তাঁর বর্ণিত হাদীসসমূহ বিদ্যমান। বুখারী শরীফে ৪টি এবং মুসলিম শরীফে ৩টি হাদীস উল্লেখ আছে।
অসংখ্য সাহাবা ও তাবেয়ীন তাঁর থেকে হাদীস রেওয়ায়েত করেছেন।
মৃত্যু : তিনি ছিলেন দীর্ঘ হায়াতপ্রাপ্ত প্রবীণতম সাহাবী। ২৫০ বছর পর্যন্ত তিনি হায়াত লাভ করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুসন নিয়ে মতভেদ রয়েছে। নির্ভরযোগ্য বর্ণনামতে ৩৫ হিজরীতে ইরাকের মাদায়েন শহরে তিনি ইন্তেকাল করেন।
তথ্যসূত্র-
১. সিয়ার ৩/৩০৬, ২. উসদুল গাবা ২/৩৪৭, ৩. আলইসাবা ২/৬২, ৪. তাযকিরা ১/৩৭, ৫. হিলইয়া ১/২৫৬।