Narrow selection

জুদি পর্বত কোথায় - Judi Porbot


12:45:16 06/11/2024

জুদি পর্বত

যখন আল্লাহর হুকুমে শাস্তির অবসান হল তখন নূহের জাহাজ জুদি পর্বতে গিয়ে ঠেকলো। এবং কাজ সমাপ্ত হলো, জাহাজ জুদি পর্বতের উপর স্থির হলো এবং বলা হলো, ধ্বংসই সীমা লংঘনকারী কওমের পরিণাম। (সূরা হুদঃ আয়াতঃ৪৪)ৎ

 

তাওরাতে জুদীকে আরারাত পর্বত শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত বলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আরারাত একটি উপদ্বীপ তথা ঐ অন্চলের নাম যা ফুরাত ও দজলার মধ্যবর্তী ভূভগু দিয়ারে বকর থেকে বাগদাদ র্পন্ত বিস্তৃত।

 

ধীরে ধীরে পানি শুকিয়ে গেল এবং জাহাজের আরোহিরা দ্বিতীয়বার শান্তি নিরাপত্তার সাথে আল্লাহর যমীনে পদাপর্ণ করল। একারণেই হযরত নূহ (আ) কে দ্বিতীয় আবুল বশর বা দ্বিতীয় আদম (মানব জাতির দ্বিতীয় জনক) বলা হয়। সম্ববতঃএই প্রেক্ষিতেই হাদীসে তাকে (প্রথম রসূল) বলা হয়েছে।

 

হযরত নূহের ঘটনার সমাপ্তি এখানেই। তবে এ গুরুত্বপূর্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে সব প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে সেসব সম্পর্কেও আলোচনার পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

 

নূহের প্লাবন সামগ্রিক ছিল না আঞ্চলিক ছিল?

নূহের প্লাবন বিশ্বব্যাপী ছিল, না কোন এক বিশেষ অঞ্চলের উপর এই প্রশ্নের উপর প্রাচীনপন্থী ও নবীন পন্থী উলামারা বরাবরই দ্বিধা বিভক্ত। মুসলিম উলামার একটি দল,ইহদী ও খ্রীষ্টানগণ এবং কোন কোন জ্যোতিষ শাস্ত্রবিদ এবং ভুপৃষ্ঠবিদ প্রকৃতি বিজ্ঞানী এ মতামত পোষণ করেন এই প্লাবন পৃথিবীব্যাপী ছিল না বরং ঐ অঞ্চলের উপরই সীমাবদ্ধ ছিল যেখানে হযরত নূহের সম্প্রদায় বসতি স্থাপন করেছিল। ঐ অঞ্চলের আয়তন ছিল একলক্ষ চল্লিশ হাজার বর্গ কিলোমিটার।

 

তাদের মতে, নূহের প্লাবন অঞ্চল ভিত্তিক না হয়ে যদি পৃথিবীব্যাপী হত তবে তার নিদর্শনসমূহ ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং বিভিন্ন পর্বরেত শীর্ষদেশে অবশ্যই পাওয়া যেত। কিন্তু বাস্তবে তে তা, পাওয়া যায় না। তাছাড়া ঐ যুগে মনুষ্যবসতি ছিল কম এবং শুধু ঐ অঞ্চলেই তা সীমাবদ্ধ ছিল, যেখানে হযরত নূহ (আ) এবং তাঁর সম্প্রদায় বসবাস করত। তখন পর্যন্ত হযরত আদমের বংশধর এর চেয়ে বেশি ছিলও না। অতএব শুধু ওরাই ছিল শাস্তিযোগ্য এবং প্লাবনের শাস্তিও তাদের উদ্দেশ্যেই পাঠানো হয়েছিল। ভূপৃষ্ঠের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে এর কোন সম্পর্ক ছিল না।

 

কিছু সংখ্যক উলামা, ভূপৃষ্ঠবিদ ও প্রকৃতি বিজ্ঞানীর মতে, এই প্লাবন ছিল সমগ্র ভূপৃষ্ঠব্যাপী বিস্তৃত। আর শুধু এই একটি নয় বরং এ ধরনের আরো অনেক প্লাবন পৃথিবীতে হয়েছে।

 

এরা প্রথমোক্ত দলের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, জামিয়া এবং ইরাকে আরব- এর এই ভূভাগ ছাড়াও অন্যান্য ভূভাগের উচ্চ পর্বতসমূহের এমন এমন সব জন্তুর অস্থির ফসিল পাওয়া গেছে যাদের সম্পর্কে ভূপৃষ্ঠ- বিদের মতামত হলো, এর জলজ প্রাণী এবং শুধু পানিতেই এরা জীবিত থাকতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের পরবর্তসমূহের শীর্ষদেশ প্রাপ্ত ঐ সমস্ত নির্দেশন থেকে প্রমাণিত হয় কোন এক যুগে পানির এমন একটি ভয়ানক প্লাবন হয়েছিল যা প্লাবিত করেছিল সারা বিশ্বের পর্বতসমূহের শীর্ষ ভাগ। 

 

উপরোক্ত দুটি অভিমত যথাযথভাবে পর্যালোচনানার পর মুহাক্কিক (তাত্বিক) উলামাগণ যে চূড়ান্ত মতামত ব্যক্ত করেছেন তা হলো ঐ প্লাবান আঞ্চলিক ছিল, সামগ্রিক ছিল না। এ বিষয়টিও এখানে প্রাণিধ্যানযোগ্য সমগ্র মানবজাতির শুধু হযরত নূহের বংশ থেকেই বিস্তার লাভ করেছে এবং আয়াতে কুরআন (তুমি ওদের অব্যহতি দিলে ওরা তোমার দাসদের বিভ্রান্ত করবে।সেদিকেই ইঙ্গিত করবে।

 

অবশ্য পবিত্র কুরআন আল্লাহর চিরাচরিত বিধান অনুযায়ী এ সমস্ত ব্যাখ্যার উপরই গুরুত্ব আরোপ করেছে যেসব উপদেশ ও শিক্ষা গ্রহণের জন্য আবশ্যকীয়। এছাড়া অপর বিষয়ের উপর কোন গুরুত্বই আরোপ করেনি বরং সেগুলোর উন্নয়ন ও পর্যালোচনার দায়িত্ব মানুষের ইলম ও বিজ্ঞতার উপরই ছেড়ে দিয়েছে কুরআন এখানে একথাই বলতে চায় যাদের বুদ্ধি ও বিবেক রয়েছে তাদের এমন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা ভুলে যাওয়া মোটেই উচিত নয়।ঘটনাটি হলো, আজ থেকে হাজার হাজার বছর পূর্বে যখন একটি জাতি আল্লাহর অবাধ্য হল, তাদের প্রতি প্রেরিত পথ পদর্শক হযরত নূহ (আ) এর হেদায়েতকে মিথ্যা আখ্যা দিল এবং তা গ্রহণ করতে স্পষ্ট অস্বীকার করল তখন আল্লাহতাআলা তার কুদরত ও পরাক্রম প্রদর্শন করেন।

 

এক প্রলয়ংকারী প্লাবন আসে এবং তাতে অবাধ্য পথভ্রষ্টরা চিরদিনের জন্য ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু হযরত নূহের অনুসারী মুমিনরা হেফাজত প্রাপ্ত হয়। আল্লাহতাআলা আপন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন। বিবেক সম্পন্নদের জন্য নিশ্চয়ই এতে উপদেশ শিক্ষা রয়েছে।

 

ইমাম আবু হানিফা রহ. এর জীবনী

ইমাম শাফেয়ী রহ. এর জীবনী

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. এর জীবনী

ইমাম মালেক রহ. এর জীবনী

 

আমাদের ইউটিউব ইউটিব চ্যানেল


No comments yet


Leave a comment

 


Name *:



Design theme color

Primary color


Alternative color