নিফাক কাকে বলে? মুনাফিকের পরিচয় - Munafiker Porichoy
14:23:18 06/02/2024
নিফাক কাকে বলে? মুনাফিকের পরিচয়
নিফাক শব্দের আভিধানিক অর্থ ভন্ডামি, কপটতা, দ্বিমুখীভাব, ধোঁকাবাজি, প্রতারণা ইত্যাদি। এর ব্যবহারিক অর্থ হলো অন্তরে একরকম ভাব রেখে বাইরে আনুগত্য প্রকাশ করা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়, অন্তরে কুফর ও অবাধ্যতা গোপন রেখে মুখে ইসলাম স্বীকার করার নাম হলো নিফাক। যে এরুপ কাজ করে তাকে বলা হয় মুনাফি। মুনাফিকরা অন্তরের দিক থেকে কাফির ও অবাধ্য। কিন্তু বাহ্যিক ভাবে তারা ইমান ও ইসলাম স্বীকার করে এবং মুসলিমদের ন্যায় ইবাদত পালন করে।
রাসুলুল্লাহ (স.) মুনাফিকদের চিহ্ন বা আলামত বর্ণনা করে বলেছেন- মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি। যখন কথা বলে মিথ্যা বলে। যখন ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করে। আর যখন কোন কিছু তার নিকট আমানত রাখা হয় তার খেয়ানত করে। (সহি বুখারী)
নিফাকের কুফল ও প্রতিকার
নিফাক একটি মারাত্মক পাপ। এটি মানুষের চরিত্র ও নৈতিকতা ধ্বংস করে দেয়। এর ফলে মানুষ মিথ্যাচারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা বলেন, ”আর আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে মুনাফিকরা নিঃসন্দেহে মিথ্যাবাদী।” (সূরা আল মুনাফিকুন আয়াত ১)
মিথ্যার পাশাপাশি মুনাফিকরা অন্যান্য খারাপ ও অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত হয়ে পড়ে। পার্থিব লোভ-লালসা ও স্বার্থ রক্ষায় তারা মানুষের অকল্যাণ করতেও পিছপা হয় না। তারা পরনিন্দা-পরচর্চা করে। ফলে সমাজে সন্দেহ ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। মুনাফিকরা ভেতরে এক আর বাইরে অন্যরকম হওয়ায় লোকজন তাদের বিশ্বাস করে না বরং সন্দেহ ও ঘৃণার চোখে দেখে সমাজের মানুষের নিকট তারা অপমানিত ও লাঞ্ছিত হয়ে জীবন কাটায়।
ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য মুনাফিকরা খুবই ক্ষতিকর। কেননা তারা মুসলমানদের সাথে মিশে ইসলামের শত্রুদের সাহায্য করে। মুসলমানদের গোপন তথ্যও দুর্বলতার কথা শত্রুদের জানিয়ে দেয়। নবী করিম (স.) এর যুগেও মদিনাতে মুনাফিকরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। ইসলাম ও মুসলমানদের সাথে থেকেও আল্লাহ তা‘লার অবাধ্য ছিল। পরকালীন জীবনে মুনাফিকদের পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। তাদের পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “নিশ্চয় মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে”। (সূরা আন নিসা আয়াত ১৪৫)
আমরা নিফাক থেকে বেঁচে থাকব। আমাদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী সকলের নিকট নিফাকের কুফল ও পরিণতির কথা তুলে ধরব। তাদের সতর্ক করব। নবীজী (স.) মুনাফিকদের যে তিনটি চিহ্ন বা নিদর্শনের কথা বলেছেন, এগুলো থেকে আমরা অবশ্যই বেঁচে থাকব। এবং নিজ জীবনে উত্তম চরিত্র অনুশীলন করব। ইনশাল্লাহ