তাওহীদ কাকে বলে? - Tawheed kake bole?
13:58:28 06/08/2024
তাওহীদ কাকে বলে?
তাওহীদ শব্দের অর্থ একত্ববাদ। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালাকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া কে তাওহীদ বলে। তাওহীদের মূল কথা হলো, আল্লাহ্ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয়। তিনি তার সত্বা ও গুণাবলীতে অদ্বিতীয় তার সমকক্ষ কেউ নেই। তিনি প্রশংসা ও ইবাদত এর একমাত্র মালিক। তার তুলণীয় কেউ নেই।
আল্লাহ তা’আলা বলেন, لَيْسَ كَمِثْلِه شَئ
অর্থ: কোন কিছুই তার সদৃশ নয়। (সূরা আশ শুরা আয়াত ১১)
আল্লাহ তায়ালাকে সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রিজিকদাতা ও ইবাদতের যোগ্য এক ও অদ্বিতীয় সত্তা হিসেবে বিশ্বাসের নাম-ই তাওহীদ।
তাওহীদের গুরুত্ব:
ঈমানের সর্বপ্রথম ও সর্ব প্রধান বিষয় হলো তাওহীদ। অর্থাৎ মুসলিম হতে হলে একজন মানুষকে সর্বপ্রথম আল্লাহ তা’আলার একত্ববাদে বিশ্বাস করতে হবে। তাওহীদে বিশ্বাস ব্যতীত কোন ব্যক্তি ঈমান বা ইসলামে প্রবেশ করতে পারে না। ইসলামের সকল শিক্ষা ও আদর্শ তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত। দুনিয়াতে যত নবী রাসুল এসেছেন, সকলেই তাওহীদের দাওয়াত দিয়েছেন। সকলের দাওয়াত এর মূল কথা ছিল, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তাওহীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠার জন্য নবী-রাসূলগণ সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। হযরত ইব্রাহিম (আ.) অগ্নিকুন্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন। আমাদের নবী মুহাম্মাদ (স.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত (দেশ ত্যাগ) করেছেন। মূলত তাওহীদই হলো ঈমানের মূল। ইসলামে তাওহীদের গুরুত্ব অপরিসীম। তাওহীদ ছাড়া কোন ব্যক্তি প্রকৃত মুসলিম হতে পারে না।
তাওহীদের প্রভাব
তাওহীদ হলো আল্লাহ্ তা’আলার একত্ববাদ বিশ্বাস। মানবজীবনে এ বিশ্বাসের প্রভাব অত্যন্ত ব্যাপক। বিশ্বাস মানুষকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুযোগ করে দেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা আমাদের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা। তাওহীদে বিশ্বাসের মাধ্যমে মানুষ সত্যকে স্বীকার করে নেয়। মানুষ এর দ্বারা আল্লাহ তায়ালার কৃতজ্ঞতা আদায় করে। তাওহীদে বিশ্বাস মানুষকে আত্মসচেতন ও আত্মমর্যাদাবান করে। মানুষ আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত অন্য কারো মাথা নত করে না। জগতের সকল সৃষ্টির উপর মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়। মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মর্যাদা লাভ করে।
সৎ চরিত্রবান হওয়ার ক্ষেত্রেও মানবজীবনে তাওহীদের প্রভাব অপরিসীম। মানুষ আল্লাহ তালার গুণাবলীর পরিচয় লাভ করে এবং সেসব গুণে গুণান্বিত হওয়ার অনুশীলন করে। মানব সমাজে ঐক্য প্রতিষ্ঠায় তাওহীদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা তাওহীদে বিশ্বাস মানব সমাজে এ ধারণা প্রতিষ্ঠা করে যে, সকল মানুষই আল্লাহ আল্লাহর বান্দা ও মর্যাদার অধিকারী। এভাবে মানুষের মধ্যে ঐক্যের চেতনা জাগ্রত হয়।
তাওহীদে বিশ্বাস মানুষকে ইবাদত ও সৎকর্মে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য সৎকর্ম অনুশীলনে অভ্যস্ত হয়। অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকে। ফলে মানব সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হয়।
তাওহীদে বিশ্বাস পরকালীন জীবনে মানুষকে সফলতা দান করে। তাওহীদে বিশ্বাস ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। বস্তুত মানব জীবনের সকল ক্ষেত্রেই তাওহীদে বিশ্বাস মুক্তি ও সফলতার দ্বার উন্মুক্ত করে।
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. এর জীবনী